নেপালের পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের ঘোষণা
নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকায় নভেম্বরে নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ভান্ডারির বেঁধে দেওয়া সময় শুক্রবারের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী কে. পি. শর্মা অলি বা বিরোধীদলীয় নেতা শের বাহাদুর দেউবা নতুন সরকার গঠন করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে পারেননি, এক প্রেসিডেন্সিয়াল বিবৃতিতে এমন কথা জানানোর পর এ ঘোষণা আসে; জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
শুক্রবার মধ্যরাতের পর (শনিবার) দেওয়া এ বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রেসিডেন্ট প্রতিনিধি পরিষদ ভেঙে দিয়েছেন এবং ১২ নভেম্বর প্রথম দফা ও ১৯ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছেন।”
তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী অলির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার পরামর্শে প্রেসিডেন্ট ভান্ডারি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী অলি নিজেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছিলেন। এ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলার পর ফেব্রুয়ারিতে নেপালের সর্বোচ্চ আদালত তার এই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক উল্লেখ করে তা বাতিল করেছিলেন।
চলতি মাসে পার্লামেন্টের এক আস্থা ভোটে পরাজিত হওয়ার পর অলি সরকারের পতন হয়। এরপর প্রেসিডেন্ট ভান্ডারি সোমবারই নতুন একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠনের জন্য দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত অলি তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
নেপালের বিরোধী দলগুলো বলছে, আস্থা ভোটে পরাজিত হওয়ায় পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করার পরামর্শ দেওয়ার বৈধ কোনো কর্তৃত্ব অলির নেই।
দেশটির পাঁচ বিরোধী দলীয় নেতা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, যখন লোকজন করোনাভাইরাস মহামারীতে ভুগছে ও মারা যাচ্ছে তখন প্রধানমন্ত্রী দেশকে গভীর সমস্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
“মহামারীর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য যখন দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার তখন পার্লামেন্ট ভেঙে জনগণের দুর্ভোগ ও সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলা হল,” তাদের বিবৃতিতে এমনটাই বলা হয়েছে।
নেপালি কংগ্রেস পার্টির মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা সরকারের এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও আইনি লড়াই শুরু করবেন।
অপরদিকে অলি (৬৯) বলেছেন, নতুন নির্বাচন কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দূর করে দিতে পারবে। মহামারী সত্ত্বেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তিনি।
নেপাল করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করছে এবং দেশটিতে গড়ে প্রতিদিন আট হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে।
শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা চার লাখ ৯৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং মহামারীতে মোট মৃত্যু ৬০২৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
নেপালে করোনাভাইরাসের ঝুঁকিকে খাটো করে দেখার জন্য বিরোধীদলগুলোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অলির বিরুদ্ধে বিস্তর সমালোচনা হচ্ছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি