`ব্রাজিলের করোনার ধরন আরও ভয়ংকর হতে পারে`
ব্রাজিলের করোনার ধরন আরও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে। দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। বলা হচ্ছে, ব্রাজিলে পাওয়া করোনাভাইরাসের ধরনটি ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং এটি আরও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের মানাউস শহরের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (ফিওক্রুজ) সম্প্রতি এ গবেষণা চালিয়েছে। দেশটিতে পাওয়া করোনার ধরনটির নাম হলো 'পি১'। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ব্রাজিলে ইদানীংকালে করোনার সংক্রমণের হারে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। দেখা গেছে যে পি১ ধরনটি ক্রমাগত পরিবর্তিত (মিউটেশন) হচ্ছে। এর ফলে ভাইরাসটি আরও ভয়ানক হওয়ার আশঙ্কা আছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পরিবর্তনের কারণে করোনার ওই ধরনটি টিকাপ্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে। গবেষণাপত্রের অন্যতম লেখক ফেলিপে নাভেচা বলেন, ‘আমরা মনে করছি, এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ভাইরাসটি অ্যান্টিবডির প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছে।’ তিনি আরও বলেন, দক্ষিল আফ্রিকায় পাওয়া করোনার ধরনটির মতোই মিউটেশন লক্ষ করা যাচ্ছে পি১ ধরনটিতে। দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনাভাইরাসের ধরনটির ক্ষেত্রে বেশ কিছু টিকা কম কার্যকর বলে আলোচনা আছে।
ফেলিপে নাভেচা বলেছেন, টিকার কার্যকারিতা কমে যায় কি না, সে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ, ভাইরাসটির 'পি১' নামের ধরনটি খুব দ্রুত বিবর্তিত হচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
এই গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ভাইরাসের 'পি১' ধরনটি প্রকৃত ধরনটির তুলনায় আড়াই গুণ বেশি ছোঁয়াচে। অর্থাৎ ব্রাজিলে পাওয়া করোনার ধরনটি দ্রুত ছড়াতে সক্ষম এবং একই সঙ্গে অ্যান্টিবডির বিরুদ্ধে এর সহনশীলতাও বেশি।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বর্তমানে টালমাটাল ব্রাজিল। দেশটিতে করোনাভাইরাসে মোট মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়ে গেছে। করোনায় বেশি মৃত্যুর দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরই আছে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশ।
ব্রাজিলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সবচেয়ে ভীতিকর দিক হচ্ছে, এখন অপেক্ষাকৃত কম বয়সীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। আবার এ বয়সীদের শারীরিক অবস্থা নাজুক হয়ে যাচ্ছে। গত মার্চ মাসের উপাত্ত বলছে, আইসিইউতে থাকা রোগীদের মধ্যে অর্ধেক ৪০ বা এর কম বয়সী।
ব্রাজিলে সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্স গত মঙ্গলবার দেশটির সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস