তীব্র রোদে কার্যক্ষমতা হারায় করোনা ভাইরাস!
শুধু তীব্র রোদই নয়, করোনা ভাইরাস কার্যক্ষমতা সাময়িকভাবে হারায় গরম ও আর্দ্র আবহাওয়াতেও। তীব্র রোদে মাত্র কয়েক মিনিটেই দুর্বল হয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস, এমনই মত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটিস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডিরেক্টরেট প্রধান উইলিয়াম ব্রায়ান।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) তিনি এ কথা বলেন। এও বলেন, গরমকাল চলছে। ফলে খুব বেশি দিন আর চোখ রাঙাতে পারবে না করোনা ভাইরাস।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে ব্রায়ান জানান, মার্কিন গবেষকরা এই ইস্যুতে কাজ করছেন। গবেষকরা বলছেন, ঘরের মধ্যে শুষ্ক ও বদ্ধ পরিবেশে জীবন্ত হয়ে ওঠে এই ভাইরাস। কিন্তু সরাসরি সূর্যের আলো পড়লে কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এবং ধীরে ধীরে মরে যায়।
এই তথ্যই আশা জাগাচ্ছে। নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ফুসফুসের রোগগুলোর লক্ষণ করোনা ভাইরাসের রোগের মধ্যেও রয়েছে। ফলে গরমে এই রোগগুলোর প্রতিকার হতে পারলে, করোনা ভাইরাসের প্রতিকারও সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সিঙ্গাপুরের মত গরম জায়গাতেও সমান সক্রিয় করোনা। সেটাই ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই রিপোর্টকে সমর্থন করে জানান, এই তথ্য তিনিও আগে তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু কেউ সেভাবে বিশ্বাস করেনি। তাই রিপোর্ট প্রকাশের আগে যথাযথ তথ্য তুলে ধরা প্রয়োজন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, স্টেনলেস স্টিলের মতো জায়গায় নিজের কার্যক্ষমতা হারাতে ১৮ ঘণ্টা সময় পায় করোনা ভাইরাস। সাধারণ আর্দ্র আবহাওয়ায়ও এই সময় লাগে। তবে উচ্চ আর্দ্রতাজনিত আবহাওয়ায় সময় পায় ছয় ঘণ্টা। এর সঙ্গে আবার সরাসরি রোদ লাগলে দুই মিনিটেই মরতে পারে করোনা ভাইরাস।
এও জানা গেছে, ১০ সপ্তাহের একটি ট্রায়াল চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যাতে দেখা হয়েছে ঠিক কোন পথে করোনার জবাব আসে। প্রায় ২০০ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর ওপর এই পরীক্ষা চালানো হয়। পরীক্ষা চালান গ্রানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তারা দেখেছেন, ভিটামিন ডি বা সূর্যালোকে থাকা ভিটামিন মানব শরীরে কাজ করে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি করতে।
এছাড়া সূর্যালোকে উপস্থিত ভিটামিন ডি মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যেসব মানুষ রোদে যান, তাদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর উপস্থিতির হার বেশি থাকে।
অন্যদিকে, একই বিষয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের গবেষকরা। তারা বলেছেন, পূর্ণবয়স্ক মানুষ ভিটামিন ডি-এর সাপ্লিমেন্ট খেলে ৫০ শতাংশ কম আশঙ্কা থাকে ফুসফুসের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার।
সাসেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জেন্না ম্যাকিওশি বলছেন, যদি একজন মানুষের শরীরে প্রয়োজনীয় হারে ভিটামিন ডি উপস্থিত থাকে, তবে অন্যান্য মানুষের তুলনায় তিনি ঠাণ্ডা লাগার অসুখে তিন থেকে চারগুণ কম ভুগবেন। এই তথ্য প্রমাণিত ইতোমধ্যেই। সুতরাং বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, করোনা ভাইরাস ফুসফুস সংক্রান্ত অসুখ হওয়ায় ভিটামিন ডি এতে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি