‘ধর্ষক ভারতীয়কে’ ইন্টার্নশিপ দিতে অস্বীকৃতি জার্মান শিক্ষকের
ধর্ষক জাতির সদস্য অভিযোগে এক ভারতীয় ছাত্রকে ইন্টার্নশিপ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এক জার্মান অধ্যাপক। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সোমবার প্রকাশিত ভারতীয় পত্রিকার খবরে বলা হয়, দিল্লিতে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত মিশায়েল স্টেইনরের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দফতর।
জানা গেছে, জার্মানির লাইপতসিস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এনেট বেক-শিকিঞ্জর ‘ধর্ষণ সমস্যা’র কথা উল্লেখ করে ইন্টার্নশিপ দিতে অস্বীকার করেন ওই ছাত্রকে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জার্মান রাষ্ট্রদূত স্টেইনরকে যে চিঠি দেয় তার প্রতিক্রিয়ায় তিনি চিঠি লেখেন নিজদেশের অধ্যাপক বেক-শিকিঞ্জরকে। এতে বলা হয়, “ভারত ধর্ষকদের দেশ নয়।”রাষ্ট্রদূত ওই শিক্ষককে আরও বলেন, আমাকে বলা হয়েছে ‘ধর্ণ সমস্যা’র কারণে এক ভারতীয় ছাত্রকে ইন্টার্শিপ দেওয়া হয়নি। আমি এটা স্পষ্ট করে জানাচ্ছি যে এ বিষয়টিতে আমার কঠোর আপত্তি আছে।
নবভারত টাইমস জানায়, লাইপতসিস বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক বেক-শিকিঞ্জরকে ওই ভারতীয় ছাত্রকে একথা বলে ইন্টার্নশিপ দিতে অস্বীকার করেন যে ভারত ‘ধর্ষণ সংস্কৃতির’ দেশ। তিনি এমনও বলেন যে, ইউরোপের কয়েকটি দেশে অনেক নারী শিক্ষক তাদের অধীনে ভারতীয় ছাত্রদের নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন।
তবে এ ঘটনায় ভারতের কড়া প্রতিক্রিয়ার সূত্রে ওই জার্মান অধ্যাপক পরে ক্ষমা চেয়েছেন। জার্মান দূতাবাসের ওয়েবসাইট মোতাবেক এনেট বেক-শিকিঞ্জর তার ক্ষমা প্রার্থনায় লিখেছেন, “আমার ভুল হয়ে গেছে। যাদের অনুভূতিতে আমি আঘাত দিয়েছি তাদের সবার কাছে ক্ষমা চাইছি।”
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লির একটি চলন্ত বাসে জ্যোতি নামে এক মেডিকেল ছাত্রীর ওপর নির্মম গণধর্ষণ ও ভয়াবহ নির্যাতন এবং পরবর্তীতে তার মৃত্যুর তোলপাড় করা ঘটনা ভারতসহ সারাবিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়। অতি সম্প্রতি বিবিসি’র প্রচারিত প্রামাণ্যচিত্র “ইন্ডিয়াস ডটার” ভারতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ভারত সরকার ওই প্রামাণ্যচিত্রের প্রচার নিষিদ্ধ করলেও বিবিসি তার প্রচার করে। এতে বিবিসিকে নোটিশও পাঠায় ভারত সরকার। জ্যোতি ঘটনায় কারাবন্দি ধর্ষক বাসচালক মুকেশের সাক্ষাৎকারভিত্তিক ওই প্রামাণ্যচিত্রে ঘটনার শিকার জ্যোতিকে হেয় করার বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। জেলখানা থেকে দেওয়া ইন্টারভিউতে মুকেশ ওই ঘৃণিত কাজের জন্য উল্টো জ্যোতিকেই অভিযুক্ত করেন।
উল্লেখ্য, চলমান ভারতে ধর্ষণ একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি বিশ মিনিটে দেশটিতে একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/একে
নিউজবাংলাদেশ.কম