করোনাভাইরাসকে স্ত্রীর মতো বলে তোপের মুখে ইন্দোনেশিয়ার মন্ত্রী
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকারের প্রচেষ্টার সঙ্গে স্ত্রীর উপর স্বামীর নিয়ন্ত্রণের তুলনা দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইন্দোনেশিয়ার আইন, রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মাহফুদ এমডি।
জাকার্তা পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার এক অনলাইন অনুষ্ঠানে তার ওই মন্তব্যকে ‘লিঙ্গ বৈষম্যমূলক এবং নারী বিদ্বেষী’ আখ্যায়িত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধিকারকর্মীসহ নানা পেশার মানুষ।
মাহফুদ এমডি ওই অনুষ্ঠানে বলেন, “গতকাল পাক লুহুত (সমুদ্রসীমা ও বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী) আমাকে একটি মেমে পাঠিয়েছেন, সেখানে বলা হয়েছে, ‘করোনা আপনার স্ত্রীর মতো। আপনি একে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন, অবশেষে বুঝতে পারবেন যে তা সম্ভব না। তারপর এটাকে মানিয়ে নিয়েই জীবনযাপন করতে শিখবেন।”
এর সমালোচনা করে ইন্দোনেশিয়ার নারী অধিকার সংগঠন সলিডারিটাস পেরেমপুয়ানের প্রধান নির্বাহী দিনদা নিছা ইউরা বলেন, মাহফুদের ওই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের মনের গতানুগতিক লিঙ্গ ও নারী বিদ্বেষই ফুটে উঠেছে।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, একজন মন্ত্রীর এমন মন্তব্যে কোভিড-১৯ মোকাবেলার প্রক্রিয়ায় সরকারের ‘অগভীর চিন্তারই’ প্রকাশ ঘটেছে। করোনাভাইরাসের সঙ্গে তুলনা করে নারীকে তিনি একটি বস্তু হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন।
মন্ত্রীর বক্তব্যে নারীকে পুরুষের অধস্তন হিসেবে তুলে ধরে হেয় করা হয়েছে অভিযোগ করে দিনদা বলেন, “এমন রসিকতা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতাকেই শুধু স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত করবে।
“সরকারের কর্মকর্তারা যখন নারীদের হেয় করে কথা বলেন, তখন নারী অধিকার পূরণ ও সংরক্ষণে সরকারের ওপর চাপপ্রয়োগ অব্যাহত রাখার কাজটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে।”
জাকার্তা পোস্ট লিখেছে, মাহফুদের ‘লিঙ্গ বিদ্বেষী’ মন্তব্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ জনগণের বিভিন্ন শ্রেণি থেকে সমালোচনার ঝড় উঠে।
মনাশ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আরিয়েল হেরায়ান্তো টুইটারে মাহফুদের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেন, “বিরক্তিকর। আশা করি এর একটা ব্যাখ্যা আমি পাব।”
এদিকে মাহফুদ ও লুহুতের মধ্যে ওই ‘রসিকতাকে’ ইঙ্গিত করে সাংবাদিক ফাব্রিয়ানা ফিরদাউস এক টুইটে ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, “স্ত্রীদের যদি আর তাদের পছন্দ না হয়, তাহলে তারা কেন দুজন দুজনকে বিয়ে করে ফেলছেন না?”
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের টালি অনুযায়ী ইন্দোনেশিয়ায় এ পর্যন্ত ২৪ হাজার ৫৩৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে এক হাজার ৪৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/ডি