এ বছরেই আসছে করোনার ভ্যাকসিন: নোভাভ্যাক্স
করোনা মহামারিতে সামনের সারির কর্মীরা সবার আগে একটি ভ্যাকসিন পাবেন এবং তা এই বছরের শেষের দিকে আসতে পারে। দৃঢ়তার সঙ্গে এমন আশার বাণী শুনিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডভিত্তিক জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি নোভাভ্যাক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্ট্যানলি এরক।
গতকাল মঙ্গলবার ভ্যাকসিনের দাম প্রসঙ্গে স্ট্যানলি বলেন, তার সংস্থার সম্ভাব্য ভ্যাকসিনকে সাশ্রয়ী দিক বিবেচনায় ধরে স্তরভিত্তিক পদ্ধতিতে দাম নির্ধারণ করতে পারে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানিয়েছে, গত সোমবার থেকে নোভাভ্যাক্স করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের প্রথম দফার পরীক্ষা শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ভ্যাকসিন একজনের শরীরে প্রয়োগ করে এই পরীক্ষা শুরু করে। জুলাই মাসে এর ফল পাওয়া যেতে পারে।
গত মার্চে নোভাভ্যাক্সের সিইও স্ট্যানলি হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প, করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের সদস্য ও ফার্মাসিউটিক্যাল এক্সিকিউটিভদের সঙ্গে একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।
স্ট্যানলি বলেন, 'আমি মনে করি, ভ্যাকসিন তৈরি হলে তা সবার আগে সামনের সারির কর্মী, বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের দেওয়ার বিষয়ে সবাই একমত হবেন। আমাদের আশানুরূপ নিরাপত্তা ও রোগ প্রতিরোধ শক্তিশালী করার ক্ষমতা যদি ভ্যাকসিনটির দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার তথ্য দেখাতে পারে, আমরা যদি এটার কার্যকারিতার প্রমাণ দেখতে পাই, তবে চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের কোনো এক সময় ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে।'
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, বিশ্বজুড়ে ১০০ টির বেশি ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ চলছে। এর মধ্যে যে কয়েকটি ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার পর্যায়ে পৌঁছেছে, এর মধ্যে নোভাভ্যাক্সের ভ্যাকসিনটি অন্যতম।
গত এপ্রিলে নোভাভ্যাক্স তাদের ভ্যাকসিন হিসেবে 'এনভিএক্স-সিওভি২৩৭৩' শনাক্ত করার ঘোষণা দেয়। এর সঙ্গে ইমিউন প্রতিক্রিয়া বাড়ানোর জন্য নোভাভ্যাক্স তাদের 'ম্যাট্রিক্স-এম অ্যাডজুভান্টস' সহায়ক ব্যবহার করার পরিকল্পনার কথা জানায়।
অ্যাডজভান্ট মূলত ভ্যাকসিনকে শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা জাগ্রত করতে ব্যবহৃত হয়; যার মধ্যে বেশি পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘসময় সুরক্ষার বিষয়টি যুক্ত থাকে।
নোভাভ্যাক্স বলছে, তারা জুলাইয়ের প্রাথমিক পরীক্ষায় প্রতিরোধ ক্ষমতা ও সুরক্ষা ফলাফল প্রত্যাশা করছে।
সফল ভ্যাকসিন তৈরির জন্য উদ্যোগী প্রতিষ্ঠানগুলেোর তালিকা বড় হচ্ছে। এতে মডার্না, ফাইজার, জনসন ও জনসন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সানোফি, গ্ল্যাক্সো স্মিথক্লাইন এবং মার্কের মতো বড় ও ছোট ওষুধ প্রস্তুতকারী এবং বায়োটেক সংস্থাগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানুষের জন্য নোভাভ্যাক্সের ভ্যাকসিন নিারপদ ও কার্যকর কি না, তা দেখতে এখনো বহু পথ পাড়ি দিতে হবে। স্ট্যানলি বলেন, প্রথম ধাপে নিরাপত্তা ও দ্বিতীয় ধাপে কার্যকারিতা দেখতে পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী তিনি। অনুমোদন পাওয়ার আগেই ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি তার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে শুরু করেছে।
স্ট্যানলি বলেন, পরের বছরের জন্য আমাদের লক্ষ্যটি বেশ উচ্চাভিলাষী। তবে আমরা মনে করি, তা করতে পারব। এক বিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মহাদেশে এটি উৎপাদন করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, ভারতে এর উৎপাদন হতে পারে।
নোভাভ্যাক্স এই মাসের শুরুর দিকে ঘোষণা করেছিল, ইউরোপীয় অলাভজনক কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপারেডনেস ইনোভেশনস সংস্থাটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করতে ৩৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস