ইকুয়েডরে হাসপাতালগুলোর বাথরুম মরদেহে ভর্তি
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত দেশ ইকুয়েডর। দেশটির স্বাস্থ্যসেবা খাত ইতিমধ্যে ভেঙে পড়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্মুখযোদ্ধা স্বাস্থ্যকর্মীদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। সম্প্রতি দেশটির গোয়াকিল এলাকার একটি হাসপাতালের ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। খবর এএফপি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গোয়াকিলের একটি হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা এত বেশি যে, মর্গে জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না— বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বাথরুমে রাখতে হচ্ছে মরদেহ। হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন— বাথরুমগুলো মরদেহে ভর্তি।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক স্বাস্থ্যকর্মী জানিয়েছেন, তাদের জোর করেই কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের বিছানা আবারও ব্যবহারের জন্য দেওয়া হচ্ছে। যে বিছানায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়েছে সঙ্গে সঙ্গেই সেই একই বিছানা আবারও ব্যবহার করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩৫ বছর বয়েসি একজন নার্স জানিয়েছেন, কীভাবে তাদের উপর মানসিক চাপ পড়ছে। তিনি জানান, যেসব অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে— তা তাদের পেশাগত ও ব্যক্তি জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
ওই নার্স জানিয়েছেন, হাসপাতালগুলোতে প্রত্যেক নার্সকে প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ জন রোগীকে দেখতে হতো। কিন্তু হঠাৎ রোগী বেড়ে যাওয়ায় তাদের সবাইকে আর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। অনেকে জায়গা না পেয়ে বাথরুমে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানেই মারা যাচ্ছেন তারা। এছাড়া কেউ মেঝেতে বা চেয়ারে বসেই মারা গেছেন। হাসপাতালের মর্গেও আর ঠাই নেই। মর্গে রাখার জায়গা না পেয়ে বাথরুমে ঠেসে রাখা হচ্ছে মরদেহ।
তবে সরকারের তরফ থেকে ইকুয়েডরে এ পর্যন্ত মারা যাওয়ার সংখ্যা জানানো হয়েছে ৮৭১ জন। কিন্তু এ সংখ্যার সঙ্গে বাস্তবতার কোন মিল নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। দেশটির প্রেসিডেন্ট লেনিন মনেরো অবশ্য স্বীকার করেছেন, সরকারি হিসাবের চেয়ে বাস্তবে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ