করোনা: আক্রান্ত ২৭ লাখ ছাড়ালো, মৃত এক লাখ ৯০ হাজার
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার ৬৫৪ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯ জন। অপরদিকে ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৬২০ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্ব। এর মধ্যে কয়েকটি দেশে এর প্রকোপ ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে ছয় হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়া একদিনে বিশ্বে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ২৮ হাজার করোনা রোগী। এ তথ্য জানিয়েছে করোনাভাইরাস নিয়ে লাইভ আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে এই মহামারি শুরু হলেও এখন ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। আক্রান্ত ও নিহতের সংখ্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ৮০ হাজার ২০৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪৯ হাজার ৮৪৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৮৫ হাজার ৯২২ জন।
আক্রান্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে স্পেন। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৩ হাজার ২৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২২ হাজার ১৫৭ জনের।
মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৫ হাজার ৫৪৯ জনের।
চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত তিন মাসে বিশ্বের ২০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ পড়ার কারণে কিছুদিনের মধ্যেই অনেক দেশেই স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সরঞ্জাম ও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের ঘাটতি দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেএইচ