অভিবাসন স্থগিতে মার্কিন প্রযুক্তিখাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে
করোনাভাইরাস মহামারি ও দেশে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে আমেরিকায় সব ধরনের অভিবাসন স্থগিত রাখার উদ্যোগ নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের কারণে দ্রুত বর্ধমান মার্কিন প্রযুক্তিখাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সিলিকন ভ্যালিতে কাজের উদ্দেশে এশিয়া থেকে অনেকে প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে যান। মেক্সিকোর পাশাপাশি, চীন ও ভারত এখন প্রচুর নতুন কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী সরবরাহ করে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ও যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির বাজার রক্ষা করার লক্ষ্যে ট্রাম্পের এই স্থগিতাদেশের কারণে মেধাবী কর্মী থেকে বঞ্চিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাত।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ১০ লাখের বেশি অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। অবশ্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সংখ্যা কিছুটা কমেছে। ২০৭ সালে সবচেয়ে বেশি কর্মী এসেছে ভারত থেকে। এরপর আছে মেক্সিকো, চীন ও কিউবা।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ লাথা ওলাভাথ বলেন, এটি স্পষ্টতই যুক্তরাষ্ট্রে চীন ও ভারত থেকে আসা প্রযুক্তিখাতের অভিবাসনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। চীন ও ভারতের অনান্য ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও এ নিষেধাজ্ঞা প্রভাব ফেলবে। বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আরও পঙ্গু ও অর্থনীতিতে আরও ক্ষতি বয়ে আনবে।
পিউ রিসার্চের তথ্যমতে, প্রায় অর্ধেক অভিবাসী নিউইয়র্ক, টেক্সাস ও ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করেন। তিনটি অঙ্গরাজ্যই শিল্পাঞ্চল সিলিকন ভ্যালিকেন্দ্রিক।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে মেধা সংকটে পড়বে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থা। ফলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে তারা। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ও প্রযুক্তি দক্ষতা গড়ে তোলার পরিবর্তে শীর্ষ প্রতিভা তাদের নিজ দেশে ফিরে আসবে। সেখানেই নিজেদের মেধার বিকাশ ঘটাবে। এমনিতেই মার্কিন সংস্থাগুলো উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে চীনা ইন্টারনেট জায়ান্ট যেমন আলিবাবা ও বাইটড্যান্সের সঙ্গে লড়াই করছে। এখন এই নিষেধাজ্ঞার ফলে শীর্ষস্থানীয় চীন, ভারতীয় ও অন্য দেশগুলোর মেধাবী প্রযুক্তি কর্মীরা সিলিকন ভ্যালির পরিবর্তে শেনঝেং, সিওল বা ব্যাঙ্গালুরুর মতো প্রযুক্তি কেন্দ্র গুলোতে চাকরি খুঁজবে।
২০১৮ সালে ট্রাম্প যখন সাত মুসলিম দেশ থেকে অভিবাসীদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রযুক্তি সংস্থাগুলো তাদের অসম্মতি জানায়। প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক তখন বলেন, অভিবাসন ছাড়া টিকতে পারবে না অ্যাপল। অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসসহ অন্য প্রযুক্তিবিদেরাও ওই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ছিলেন।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক টুইট বার্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, অদৃশ্য শত্রুর আক্রমণ মোকাবিলা ও আমেরিকার মহান জনগণের কর্ম সংরক্ষণের জন্য তিনি অস্থায়ীভাবে অভিবাসন বন্ধে নির্বাহী আদেশ জারি করবেন। তবে এই টুইট বার্তায় বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। কত দিনের জন্য অভিবাসন বন্ধ হবে, গ্রিন কার্ড যাঁদের আছে বা সীমান্তে এ নির্বাহী আদেশ কীভাবে ব্যবহৃত হবে, তা তিনি স্পষ্ট করেননি। এ বিষয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম হোয়াইট হাউস থেকে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএস