দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালু করতে মতামত চেয়েছে বিটিআরসি
প্রতীকী ছবি
দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর লক্ষ্যে স্যাটেলাইট পরিষেবা অপারেটরের জন্য খসড়া নিয়ন্ত্রক এবং লাইসেন্সিং নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। নির্দেশিকা চূড়ান্ত করতে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে জনগণের মতামত চাওয়া হয়েছে।
গত ২৯ অক্টোবর তাদের ওয়েবসাইটে এ নির্দেশিকা প্রকাশ করে বিটিআরসি।
দেশের মোবাইল ফোন অপারেটর এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা দেশে ডেটা পরিষেবায় বিপ্লব ঘটবে এমন বিবেচনায় স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, এই উদ্যোগ ডিজিটাল বিভাজন দূর করে সেতু বন্ধনে নতুন সুযোগ উন্মোচন করতে পারে।
বিটিআরসির খসড়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর অধীনে ‘জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ফার্ম নিবন্ধক’-এর অধীনে নিবন্ধিত মালিকানা, অংশীদারত্ব এবং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে এনজিএসও স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং পরিষেবাগুলো নির্মাণ, মালিকানা, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১০০ শতাংশ এফডিআই বা বিদেশি অংশীদারত্ব বা যৌথ উদ্যোগ বা অনাবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) থেকে বিনিয়োগ এনজিএসও স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং পরিষেবাগুলো নির্মাণ, মালিকানাধীন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করতে পারবে। নির্দেশিকা অনুযায়ী লাইসেন্সের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর।
এতে আরও বলা হয়েছে, লাইসেন্সধারী নিম্নলিখিত এনজিএসও স্যাটেলাইট পরিষেবাগুলো প্রদানের জন্য অনুমোদন পাবে : ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা, ইন্ট্রানেট পরিষেবা (দেশীয় ডেটা যোগাযোগ), ইন্টারনেট অফ থিংস ও মেশিন-টু-মেশিন সংযোগ, গতি পরিষেবায় আর্থ স্টেশন, আর্থ এক্সপ্লোরেশন স্যাটেলাইট পরিষেবা, রিমোট সেন্সিং ও আবহাওয়া সংক্রান্ত পরিষেবা এবং বিটিআরসি দ্বারা অনুমোদিত অন্য কোনো পরিষেবা।
তবে অপারেটররা সরাসরি-টু-হোম পরিষেবা, সম্প্রচার পরিষেবা, স্যাটেলাইট আইএমটি-ভিত্তিক পরিষেবা বা টেলিযোগাযোগ পরিষেবা প্রদানের জন্য অনুমোদিত নয়।
আবেদন বা প্রসেসিং ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ টাকা, যার মধ্যে অধিগ্রহণ ফি ১০ হাজার ডলার এবং বার্ষিক ফি ৫০ হাজার ডলার।
লাইসেন্সধারীকে তার বার্ষিক নিরীক্ষিত মোট রাজস্বের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বিটিআরসিকে দিতে হবে। গ্রস রাজস্বের আরো ১ শতাংশ বাধ্যতামূলক হিসেবে ‘মহাকাশ শিল্পের উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনায় অবদান’-এর অংশ হিসাবে জমা দিতে হবে।
লাইসেন্সধারীকে অবশ্যই সেবা শুরু করার আগে বাংলাদেশের মধ্যে অন্তত একটি গেটওয়ে সিস্টেম স্থাপন করতে হবে। তবে বিটিআরসি লাইসেন্সধারীদের অতিরিক্ত গেটওয়ে স্থাপনে উৎসাহিত করছে।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে স্থাপন করা যেকোনো ব্যবহারকারীর টার্মিনাল অবশ্যই এই স্থানীয় গেটওয়ের মাধ্যমে এবং পরিবেশিত হতে হবে। খসড়া অনুযায়ী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পরিষেবার জন্য এই টার্মিনালগুলো থেকে সমস্ত ট্রাফিক অবশ্যই এই স্থানীয় গেটওয়ের মাধ্যমে হতে হবে।
এনজিএসও গেটওয়ে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ডেটা ট্রাফিক পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ের সাথে সংযুক্ত হবে।
এ প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর এ পদক্ষেপ ব্যাকহোলিং, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও গ্রাহকের ডেটা ব্যবহারের পাশাপাশি ডিজিটাল বিভাজন দূর করে সেতু বন্ধনে নতুন দ্বার উন্মোচনে সহায়ক হবে। কেননা এর মাধ্যমে ইলন মাস্কের স্টারলিংক এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অন্যান্য কোম্পানিগুলোর বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশের পথ সুগম করতে পারে। সূত্র: বাসাস
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি