মঙ্গলে শ্বাস নেবার মতো অক্সিজেন তৈরি করল নাসার রোভার
মঙ্গল গ্রহের পাতলা স্তরের কার্বন ডাই অক্সাইড পূর্ণ বায়ুমন্ডল থেকে প্রথমবার শ্বাস নিতে পারার মতো অক্সিজেন তৈরি করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রোভার পারসিভিয়ারেন্স।
গত শুক্রবার মঙ্গলে প্রথম ছোট্ট হেলিকপ্টার ‘ইনজেনুয়িটি’ ওড়ানোর পর এবার পারসিভিয়ারেন্স মিশনে প্রযুক্তির আরেক সাফল্য এল।
বিবিসি জানায়, এই রোভারে আছে ‘মার্স অক্সিজেন ইন-সিটু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন এক্সপেরিমেন্ট’ বা মোক্সি। এই যন্ত্র দিয়েই তৈরি করা হয়েছে অক্সিজেন।
ছয় চাকার রোভার ১৮ ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলে নামার পর গত ২০ এপ্রিল অর্থাৎ, মঙ্গলের দিনের হিসাবে ৬০ তম মার্সিয়ান ডে-তেই অক্সিজেন ছেঁকে বের করার পরীক্ষা করে ফেলেছে।
প্রাথমিকভাবে ৫ গ্রাম অক্সিজেন তৈরি হয়েছে। মঙ্গলে একজন নভোচারীর ১০ মিনিট শ্বাস নিতে এই পরিমাণ অক্সিজেন দরকার হয়। মোক্সির সাহায্যে ঘন্টায় ১০ গ্রাম অক্সিজেনও তৈরি করা যেতে পারে।
ভবিষ্যতে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর মিশনে অক্সিজেন তৈরির আরও উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন মোক্সি পাঠানোর চিন্তা করছে নাসা। তাতে করে নভোচারীদের চাহিদা মেটাতে পৃথিবী থেকে আর বিপুল পরিমাণ অক্সিজেন সেখানে বয়ে নিয়ে যেতে হবে না।
মঙ্গলের বাতাস ছেঁকেই তৈরি হবে ফুরফুরে অক্সিজেন। এতে শ্বাসবায়ু তো বটেই, রকেটের জ্বালানি নিয়েও আর মাথা ঘামাতে হবে না। মঙ্গলে তৈরি অক্সিজেন দিয়েই রকেটের জ্বালানি তৈরি করা যাবে। আর তেমন হলে মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে যাতায়াতও সহজ হয়ে যাবে।
নাসার হিসাবমতে, চারজন নভোচারীর রকেটে চেপে মঙ্গলে যেতে প্রায় ৭ মেট্রিক টন জ্বালানি লাগে, সেইসঙ্গে দরকার হয় ২৫ মেট্রিক টন অক্সিজেন।
সেক্ষেত্রে পৃথিবী থেকে মঙ্গলে ২৫ টন অক্সিজেন ট্যাংক বয়ে নিয়ে যাওয়ার চাইতে বরং এক টন ওজনের একটি অক্সিজেন তৈরির যন্ত্র বয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ, বলেন মোক্সির প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর মাইকেল হেচেট।
মঙ্গলগ্রহে থেকে কাজ করা নভোচারীদের একবছরের জন্য এক মেট্রিক টন মতো অক্সিজেন দরকার হতে পারে বলে জানান তিনি। এর জন্য আগামী দু’বছর মোক্সিকেই বার বার কাজে লাগিয়ে এই পরিমাণ অক্সিজেন উৎপাদনের পরিকল্পনা করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি