News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৯ মে ২০২০
আপডেট: ০৬:০৪, ২০ জুন ২০২০

মোবাইলের উপরিভাগের মাধ্যমে ছড়াতে পারে করোনা: গবেষণা

মোবাইলের উপরিভাগের মাধ্যমে ছড়াতে পারে করোনা: গবেষণা

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস কীভাবে মানবদেহে প্রবেশ করছে তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। আবারও সামনে এলো মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে মরণঘাতী ভাইরাস করোনা।

মোবাইল ফোনের উপরিভাগে লেগে এ ভাইরাস আপনার ঘর পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি জানতেও পারবেন না। তাই করোনার এ দুঃসময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারে হতে হবে অতিরিক্ত সচেতেন। এমনই তথ্য জানিয়েছেন দুবাই পুলিশের এক বিজ্ঞানী।

বৈশ্বিক মহামারি আকার ধারণ করা করোনা এখন পর্যন্ত ৪৮ লাখেরও বেশি মানুষের শরীরে পাওয়া গেছে। খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এ ভাইরাস। 

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, করোনা ছড়িয়ে পড়ার একটি প্রধান উৎস মোবাইল ফোন। আর এবার দুবাই পুলিশও জানিয়েছে একই তথ্য।

দুবাই পুলিশের ফরেনসিক সায়েন্সেস ও ক্রিমিনোলজি বিভাগের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নবিষয়ক পরিচালক মেজর ডা. রশিদ আল গাফরি অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের নিয়ে একটি গ্রুপে গবেষণা করেন।

তাদের ওই গবেষণা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে, মোবাইল ফোনের উপরিভাগের মাধ্যমেও করোনা একজনের থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

মেজর ডা. রশিদ আল গাফরি বলেন, আমরা বিভিন্ন মোবাইল ফোন নিয়ে বিশ্লেষণ করেছি। ফোনের উপরিভাগে শত শত জীবাণুর প্যাথজেন পেয়েছি। মোবাইল ফোন সংক্রমক রোগজীবাণু যেমন, ব্যাকটেরিয়া ও করোনার মতো ভাইরাস বহন করে। মহামারির এ সময়ে করোনা ছড়াতে ফোনগুলো সম্ভবত ‘ট্রোজান হর্স’র ভূমিকা পালন করতে পারে।

গবেষণা অনুসারে, ফোনের মাধ্যমে এই প্যাথোজেনগুলো স্থানান্তর হয় খুব সহজে। এর মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ সম্ভবত কর্মস্থল, গণপরিবহন, ক্রুজ জাহাজ এবং বিমানগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

রশিদ আল গাফরি গণমাধ্যমকে বলেন, মোবাইল ফোনগুলো ব্যবহারের সময় তাপ উৎপন্ন করে। এর মাধ্যমে জীবাণুগুলোকে দীর্ঘকাল ঠিকে থাকতে এবং পুনরুৎপাদন করতে সহায়তা করে। ফোনগুলো করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণে সহায়তা করবে। 

ট্র্যাভেল মেডিসিন ও ইফেক্টিয়াস ডিজিজ নামক জার্নালে এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।

গবেষণামূলক সিদ্ধান্ত প্রকাশের আগে মোবাইল ফোনে পাওয়া অণুজীবগুলো বিশ্লেষণ করে সমস্ত গবেষণা এবং জার্নাল পর্যালোচনা করেন বিজ্ঞানীরা। 

গাফরি বলেন, দূষিত মোবাইল ফোনগুলো সত্যিকারের জৈব সুরক্ষার ঝুঁকি তৈরি করে। রোগজীবাণুগুলো সহজেই ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে মোবাইল ফোন। কারণ যদি কোনো ব্যক্তি ভাইরাসে সংক্রমিত হয় তবে খুব সম্ভবত তাদের মোবাইল ফোনগুলোও দূষিত হবে।

দুবাই পুলিশের এই বিজ্ঞানী বলেন, প্রতিদিন মানুষ গড়ে শতবার তাদের মুখ স্পর্শ করে। এরপর মোবাইল স্পর্শ করে। এভাবে কভিড -১৯-এর মতো রোগের সংক্রমণের আশঙ্কা অত্যন্ত বেশি। করোনাভাইরাস মহামারি হওয়ার আগে মানুষ খুব কমই ফোন পরিষ্কার বা জীবাণুমুক্ত করতেন। তবে এখন মানুষ প্রতিদিন তাদের ফোনগুলো পরিষ্কার করছে। এটি এক ধরনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

যেভাবে নিরাপদে থাকবেন:

মনে রাখতে হবে, আপনার ফোনে যা আছে তা আপনার হাতে স্থানান্তরিত হতে পারে। তারপর মুখে স্পর্শ করার সময় তা শরীরে ভেতরে চলে যেতে পারে। আবার ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির ফোনে হাত দিলে আপনার হাতেও করোনা লেগে যেতে পারে। এই কারণে দুবাই পুলিশের বিজ্ঞানী মেজর ডা. রশিদ আল গাফরি বার বার হাত ধৌত করতে বলেছেন। সেই সঙ্গে অ্যালকোহলভিত্তিক স্যানিটাইজার দিয়ে ফোন ভাইরাস মুক্ত করার কথাও বলেছেন।

মেজর ডা. রশিদ আল গাফরি গণমাধ্যমকে বলেন, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য টাচস্ক্রিন ডিভাইসগুলো প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ৭০ শতাংশ আইসোপ্রপিল অ্যালকোহল স্প্রে বা অন্যান্য জীবাণুনাশক পদ্ধতিতে এই কাজটি করতে হবে। আপনার ফোনটিকেও জীবাণুর বাহক হিসেবে দেখুন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/কেএইচ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়