হ্যাকার টিমের মধ্যে বিশ্বসেরা বাংলাদেশ!
ঢাকা: বিশ্বের এক হাজার ১১৯টি হ্যাকার টিমের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। ‘বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারস’ নামে হ্যকার টিমটি এখন সবার ওপরে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের হ্যাকার টিমের মধ্যে দলগতভাবে এ কৃতিত্ব অর্জনের ঘটনা এবারই প্রথম। বিশ্ব হ্যাকারদের হ্যাকিং সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করা ’হ্যাক মিরর’ সাইটের সর্বশেষ তথ্যে এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে।
তবে এর আগে ইন্দোনেশিয়ান, ইরান, তুরস্কের হ্যাকাররা এগিয়ে ছিল। ইন্দোনেশিয়া ছিল প্রথম স্থানে।
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সাইবারস্পেস হিসেবে স্বীকৃত ইজরাইলী সাইবারস্পেসে হামলা চালিয়ে অনায়াসে শত শত সাইট হ্যাক করে আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশের এ হ্যাকার দলটি। চারটি সাইবার যুদ্ধ (ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া) পরিচালনা এবং সাইবার যুদ্ধ চলাকালীন সে দেশের সরকারি উদ্যোগে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে পিছু হটে ইন্দোনেশিয়ান হ্যাকাররা। এমন নানান সাফল্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের হ্যাকার টিমটি এখন বিশ্বের এক নম্বর অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
অন্যদিকে এই হ্যাকার টিমটি সম্প্রতি জোন-এইচে পৃথিবীর সেরা ৫০টি হ্যাকার টিমের মধ্যে ১৫ নম্বর স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। ৪ বছরের চেয়ে সামান্য বেশি সময় ধরে হ্যাকিং নিয়ে কাজ করে শীর্ষ স্থানে চলে এল ‘বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারস’। তবে এককভাবে জোন-এইচে বাংলাদেশের আরেক সেরা হ্যাকার ‘টাইগার ম্যাট’ এই মুহূর্তে ২৩ নম্বর স্থানে অবস্থান করছেন। তিনি এর আগে ৭ম স্থানে ছিলেন। অনিয়মিত হ্যাকিংয়ের কারণে তিনি ক্রমশ নিচের দিকে চলে আসছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ৯ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় হ্যাক মিরর এবং ২০০২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় জোন-এইচ।
২০১৫ সালের সর্বশেষ তথ্যমতে জোন-এইচের শীর্ষ ২০টির মধ্যে সাতটি বাংলাদেশি হ্যাকার টিম। তাদের মধ্যে সবার শীর্ষে বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারস, তৃতীয় স্থানে টিম সিসি, অষ্টম ও নবম স্থানে যথাক্রমে ইউনাইটেড বাংলাদেশি হ্যাকারস এবং সাইবার সোর্ড, ১৩তম স্থানে এক্সপায়ার সাইবার আর্মি, ১৮তম স্থানে বাংলাদেশ ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারস এবং সর্বশেষ ২০ নাম্বারে অবস্থান করছে সাইবার-৭১।
আর কত দিনে জোন-এইচে পৃথিবীর সেরা হ্যাকারদের সরিয়ে প্রথম স্থানে আসা সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারসের এডমিন রোটেটিং রটোর বলেন, র্যাঙ্কিংয়ে আমরা এগিয়ে থাকার ফলে সারা বিশ্বের হ্যাকারদের চেয়ে আমাদের হ্যাকাররা যে অনেক দক্ষ তাই প্রমাণিত হলো। আমরা এখন যে গতিতে এগুচ্ছি তা নিয়মিত করতে পারলে আগামী ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে আমরাই হব পৃথিবীর সেরা এবং শক্তিশালী হ্যাকার টিম।
তিনি বলেন, যেখানে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হ্যাকাররা কাজ করেও কোনো অবস্থানে নেই সেখানে আমরা কোনো সাহায্য না পেয়েই ১ নম্বরে। এর ফলে আমাদের দেশের সাইবার স্পেসের উপর হ্যাকারদের হামলা অনেক কমে গিয়েছে। যদিও বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারসের প্রক্সি টিম বিশ্বের অনেক দেশেই আছে। যাদের কাজ হলো বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে হামলা হলেই তাদের উপরে পাল্টা হামলা চালানো।
রোটেটিং রটোর বলেন, প্রথমে এটা মনে রাখতে হবে একজন হ্যাকার কখনই খারাপ না। খারাপ হলো ক্র্যাকার। হ্যাকিং করা এক প্রকার দুঃসাধ্য কাজ। প্রযুক্তির ব্যাপারে তুখোড় জ্ঞান না থাকলে হ্যাকার হওয়া সম্ভব না।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে পরবর্তী যুদ্ধগুলো পরিচালনা করার জন্য সাইবার সৈন্য হিসেবে হ্যাকারদের মিলিটারিতে অন্তর্ভুক্ত করছে। ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন, ইরান, আমেরিকাতে সরকারের সাথে হ্যাকাররা কাজ করে গোয়েন্দা হিসেবে। আমাদের অনেক সাফল্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কোনো বাংলাদেশী সাইট হ্যাক হলে তৎক্ষণাৎ রিষ্টোর করে দেওয়া।
প্রসঙ্গত, হ্যাক মিরর এবং জোন-এইচ মূলত বিশ্ব হ্যাকাররা কে, কয়টি, কীভাবে সাইট হ্যাক করেছে তা তুলে ধরে। হ্যাকাররা তাদের শ্রেষ্ঠত্ব এখানেই প্রমাণ করে থাকে। হ্যাক মিররে বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারসের প্রথম স্থানে উঠে আসার চিত্র দেখা যাবে http://www.hack-mirror.com/team_ranking.html এই ঠিকানায়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফই
নিউজবাংলাদেশ.কম