রহস্যময় ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ ভাইরাস, লক্ষণ ও প্রতিকার
ফাইল ছবি
করোনার পর কোনো ভাইরাসের নাম শুনলেই ভয়ে চুপসে যান অনেকে। করোনার সেই ভয়াবহতা আর নেই। তবে করোনার পর নতুন এক ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। অদ্ভুত নামের ভাইরাসটি বর্তমান সময়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। নতুন এই ভাইরাসের নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা।
জানা গেছে, নতুন এ ভাইরাসে আক্রাক্ত হচ্ছেন আফ্রিকার দেশ উগান্ডার বুন্ডিবুগিও জেলার মানুষরা। নারী ও কিশোরীরাই মূলত এ ভাইরাসে আক্রাক্ত হচ্ছেন। প্রায় ৩০০ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ভাইরাসে আক্রান্তদের জ্বর এবং অত্যধিক শরীর কাঁপুনি হচ্ছে। এ কারণেই ভাইরাসটির নাম ডিঙ্গা ডিঙ্গা।
জি নিউজে বলা হয়েছে, ডিঙ্গা ডিঙ্গা শব্দটির অর্থ নাচের মতো কাঁপা। স্থানীয় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এর কারণ ও প্রতিকারের উপায় বের করার চেষ্টা করছেন। কীভাবে এবং কেন এ রোগ ছড়াচ্ছে তা এখনো জানা যায়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, উগান্ডার বুন্দিবুগিও জেলায় নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এর নাম ‘ডিঙ্গা ডিঙ্গা’ ভাইরাস। স্থানীয় এ শব্দের অর্থ ‘নাচের মতো শরীর নড়াচড়া করা’।
সংবাদ সংস্থা আইএএনএস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এরই মধ্যে প্রায় ৩০০ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জ্বর আসে এবং দেহ কাঁপতে কাঁপতে নাচের মতো অবস্থা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আক্রান্ত খুব দুর্বল হয়ে যায়। এমনকি অবস্থা ভয়াবহ হলে দেহ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে উগান্ডার স্বাস্থ্য বিভাগ।
তবে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে কেউ মারা যায়নি। এমনকি এটি ছোঁয়াচে কিনা তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় বিশেষ অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, ফ্রান্সে ১৫১৮ সালে প্রায় একইরকম সংক্রমণ দেখা যায়। এই ডিঙ্গা ডিঙ্গার মতোই লক্ষণ ছিল ওই রোগের। সম্প্রতি কঙ্গোতেও এমন ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে।
ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্তের লক্ষণ:
ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে অত্যধিক কাঁপুনি হতে থাকে। অনিয়ন্ত্রিত কাঁপুনি এ ভাইরাসে আক্রান্তের অন্যতম লক্ষণ। একইসঙ্গে জ্বর, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সারা শরীরে ব্যথার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। মাথা ব্যথাও করে।
ডিঙ্গা ডিঙ্গায় আক্রান্তের শ্বাসকষ্ট হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। এমনকি অবস্থা ভয়াবহ হলে দেহ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।
প্রতিকার:
বুন্ডিবুগিও জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কিয়িটা ক্রিস্টোফার জানিয়েছেন, ডিঙ্গা ডিঙ্গা রোগের চিকিৎসায় বর্তমানে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য দলগুলো এ চিকিৎসা প্রদান করছে। এই রোগে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, এই রোগের চিকিৎসায় ভেষজ ওষুধ এখনো কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সাধারণত রোগীরা এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি এই রোগের লক্ষণ দেখতে পান তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসা নিলে দ্রুত সময়ে সুস্থ হওয়া সম্ভব।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি