রাজধানীতে খিলি পানের জাদুকর
ঢাকা: সমাজের নানা মানুষের নানা পেশা। এর মধ্যে কারো কারো পেশায় ভিন্নতা রয়েছে। এ ভিন্নতা ওই পেশার বৈচিত্র্যে। মুহাম্মদ সাউদ পেশায় খিলি পান বিক্রেতা। তবে তিনি অন্যান্য পান বিক্রেতার মতো নন। তিনি শুধু পান বিক্রিই করেন না, পান নিয়ে শিল্পচর্চা করেন। আর তাই তাকে খিলি পানের জাদুকরও বলা যায়।
রাজধানীর মিরপুরের রাস্তার দুপাশে অসংখ্য পান-দোকানের দেখা পাওয়া যাবে। এসব দোকানে একখিলি পান ৫-২০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু সাউদের খিলি পানের দাম দশ থেকে তিনশো টাকা। তার বানানো খিলি পানে থাকে ৭০ রকমের দেশি-বিদেশি রঙ-বেরঙের মশলা।
এ পানের এমনই জাদু যে, যে একবার খাবে সারা জীবন এর স্বাদ তার মনে থাকবে। সাত বছর ধরে তার এ ব্যবসা। মিরপুরে অবস্থিত তার প্রতিষ্ঠানের নাম মা পান মশলা।
সাউদ জানান, পারিবারিক অবস্থা খুব একটা ভালো না হওয়ায় বেশি লেখাপড়া করতে পারেননি। পরিবারের কেউই পান ব্যাবসার সাথে জড়িত ছিল না। তবু পেটের দায়ে ১৩ বছর আগে চ্যানেল আইয়ের পান-সুপারি কাজ শুরু করেন তিনি। সেখানে দীর্ঘ ৬ বছর পান বানানোর কাজ করেন।
তখন থেকেই পান নিয়ে সবার থেকে আলাদা কিছু করার ভাবনা তার মাথায় ঘুরতে থাকে। দেশ ছেড়ে চলে যান কলকাতা। মায়াবী এ নগরীতেই তিনি রপ্ত করেন পান বানানোর নতুন নতুন কৌশল। ওস্তাদ ধরে শিখে নেন বিভিন্ন ধরনের মশলার ব্যবহার। শেখার কাজ শেষ করে ফিরে আসেন দেশে।
সাত বছর আগে দুলাখ টাকা মূলধন নিয়ে খুলে বসলেন মা পান মশলা নামের প্রতিষ্ঠান। এখন তিনি দুটো পান-দোকানের কর্ণধার। প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার টাকার খিলি পান বিক্রি হয় তার দোকানে।
রাজধানীর শেরাটন-সোনারগাঁওসহ দেশের বড় বড় হোটেলে তিনি খিলি পান সরবারাহ করছেন নিয়মিত। দেশের বিভিন্ন শহরে বড় বড় অনুষ্ঠানেও তার পানের চাহিদা বাড়ছে। এরই মধ্যে তিনি আগুন-পান নিয়ে তার গবেষণার কথা জানিয়েছেন।
পানপ্রেমীদের মাঝে আগুন-পান চমক সৃষ্টি করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরো জানান, তার এবার ইচ্ছে হয়েছে সাতরঙা চা তৈরি করবেন। এ চা তৈরিতেও থাকবে তার আলাদা রকমের কৌশল।
নিউজ বাংলাদেশ.কম/আরবিএস/এটিএস
নিউজবাংলাদেশ.কম