পরীক্ষা পাসে নকলের মহোৎসব!
একটি পুরনো দালানের দেয়াল বেয়ে উপরে উঠছে কয়েক ডজন লোক। এদের কেউ কেউ জানালা দিয়ে দালানের ভেতরে কাউকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন কিছু একটা । এমন দৃশ্য প্রকাশিত হয়েছে ভারতের হিন্দুস্থান টাইমস এ । পরীক্ষায় নকল সরবরাহের এই বিষেশ দৃশ্যটি ভারতের বিহার রাজ্যের মাধ্যমিক সমাপনী পরীক্ষা কেন্দ্রের।
জেনে রাখা ভালো, নকলের মহোৎসব ভারতের এ পরীক্ষা আমাদের দেশে এসএসসির সমমান।
ভারতীয় ওই সংবাদমাধ্যম জানায়, পরীক্ষার্থীকে নকল সরবরাহ করতে চার-পাঁচতলা স্কুল ভবনে কেউ দঁড়ি বেয়ে, কেউ এমনিতেই উঠে পড়েছেন। জানালা দিয়ে পরীক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে নকল। বাবা, বন্ধু, বড় ভাই, ছোট ভাই, অন্যান্য স্বজন যে যেভাবে পেরেছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে নকল সরবরাহ করে পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করেছে।
সচেতন (!) অভিভাবক ও স্বজনরা তাদের শিক্ষার্থীদের উজ্জল ভবিষ্যতের কথা ভেবেই যেন নিজেরা কষ্ট করে সরবরাহ করছেন নকল। তবে আশার কথা হলো, নকলের অভিযোগে নিরস কর্তৃপক্ষ একইসঙ্গে বহিষ্কার করেছেন সাড়ে সাতশ’ শিক্ষার্থীকে। আর নকলে সহায়তা করার অভিযোগে গ্রেফতার করেছেন আরো তিনশ’ জন অভিভাবক-স্বজনকে। ।
এ ঘটনা নিয়ে ভারতজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও গরুত্বও দিয়ে প্রকাশ করেছে।
এবার প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী বিহারে মাধ্যমিক স্কুল সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এদের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে দেখা গেছে নকল প্রবণতা ।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিহারের শিক্ষামন্ত্রী পি কে শাহি বলেছেন, “এ ধরনের নকল প্রবণতা সরকারের একার পক্ষে বন্ধ করা কঠিন। এ জন্য পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সহায়তার হাত বাড়াতে হবে, সচেতন হতে হবে।”
তিনি বলেন, “এবার প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। জানতে পেরেছি, একজন পরীক্ষার্থীকে নকলে সাহায্য করতে উপস্থিত হচ্ছেন তার পরিবারের তিন-চারজন লোক। তাহলে সাহায্যকারীদের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ। এতো লোককে মোকাবিলা করা প্রায় অসম্ভব। এ জন্য পরীক্ষার্থীর পরিবারকে সচেতন হতে হবে। কারণ নকল দিয়ে সাহায্য করার নামে তারা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতকেই নষ্ট করছেন।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএইচকে
নিউজবাংলাদেশ.কম