News Bangladesh

সুদীপ্ত শামীম, গাইবান্ধা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
আপডেট: ১৮:০৭, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

৬০ বছর ধরে বাঁশের সাঁকোতে নদী পার হন ৫ গ্রামের মানুষ 

৬০ বছর ধরে বাঁশের সাঁকোতে নদী পার হন ৫ গ্রামের মানুষ 

ছবি: নিউজবাংলাদেশ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের গনকপাড়া গ্রামের সীমানা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর অলিরঘাট পারাপারে ৫ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো। একটি ব্রিজের অভাবে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের ভোগান্তির যেন অন্ত নেই। স্বাধীনতার আগ হতে এই ভোগান্তির মধ্যে জীবন যাপন করে চলছে পাঁচ গ্রামের জনসাধারণ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের সীমানা ঘেঁষে যাওয়া প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো গনকপাড়া গ্রামে সীমানা সংলগ্ন করতোয়া নদীর অলির ঘাট। নদীর ঘাট হতে ঘাটের কিনারা অনেক উচ্চতা (উচু) হওয়ায় নদী পারাপারে ভ্যান, রিক্সা, সাইকেল, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এ কারণেই কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের গনকপাড়া, জাফর, মুংলিশপুর, পালপাড়া, শীলপাড়া, জাইতরসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এপার থেকে ওপারে চলাচলের জন্য শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া চলতেই পারে না। 

নদীর পানি শুকিয়ে গেলে চলাচলের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয় এবং নদীতে পানি বেড়ে গেলে পারাপারের জন্য নৌকার ব্যবস্থাও থাকে না। তখন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়ে যায়। প্রতিদিন যাতায়াত করা স্কুল, কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, এনজিও কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ চলাচল করে থাকেন এই অলিরঘাট দিয়ে।

জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও আজ এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। এ ভোগান্তি যেন এ এলাকার মানুষের নিত্য-দিনের সঙ্গী। 

অলিরঘাট পেড়িয়ে পাশ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাটের দূরত্ব ২ কিলোমিটার। যাতায়াতের বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের কারণে ২ কিলোমিটারের স্থলে পথচারীদের ঘুরতে হয় অন্তত ৮ কিলোমিটার রাস্তা। তাই এ ঘাট দিয়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। পথচারীরা এই ঘাট পার হয়ে বৃহত্তর হাট-বাজারগুলোতে যাতায়াত করে থাকেন। সাধারণ মানুষের দাবি এই গুরুত্বপুর্ণ স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আশে পাশের গ্রামের মানুষও এই ঘাট দিয়ে পার হয়। বিশেষ করে আমাদের গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ পার্শ্ববর্তী ঘোড়াঘাট ব্যবসা বাণিজ্য ও হাট-বাজার করে। তারা অন্য ঘাট দিয়ে পার হয়ে গিয়ে দুপুরে বাড়িতে যখন আসে তখন নদীর ওই পারে গাড়ি, সাইকেল রেখে আসতে হয়। শুকনা মৌসুম বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে পারাপারের কোন ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা পোহাতে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ খুব দরকার।

উপজেলার সচেতন মহল বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পাঁচ গ্রামের বাসিন্দারা পারাপারে জন্য একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। ব্রিজটি নির্মাণ করা হলে সবার অনেক উপকার হবে। তখন আর কারো সমস্যায় পড়তে হবে না। মানুষের যাওয়া আসা অনেক সহজ হবে। মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমে আসবে।

পলাশবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) তপন চক্রবর্তী বলেন, 'আমি উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। জানা মতে উপজেলার অনেকগুলো ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ওই স্থানের বিষয়ে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসান বলেন, 'স্থানটি পরিদর্শন করব। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রয়োজনীয় আবেদন জানানো হবে।'

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়