লাজুকলতা লজ্জাবতীর লজ্জার রহস্য
ছবি: সংগৃহীত
একটু ছুঁয়ে দিলেই গাছের পাতা ন্যুয়ে পড়ে। এমনকি তুড়ি বাজালেও লজ্জাবতী গাছের পাতা ন্যুয়ে চুপসে যায়। এ কারণে এ গাছের দেখা পেলে শিশু বা বৃদ্ধ সবাই একটু ছুঁয়ে দেখতে চায়। লজ্জাবতীর বিশেষ এ বৈশিষ্ট্য থাকায় অন্য যে কোনো গাছ থেকে এ গাছকে আলাদা করা যায়। তাই আদর করে অনেকে ডাকেন লাজুক লতা বলে।
এ বৈশিষ্ট ছাড়াও এ গাছের ফুল বেশ সুন্দর। গাছটির নাম লজ্জাবতী হলেও অনেকের কাছে এটি লাজবন্তী গাছ নামেও পরিচিত।
লজ্জাবতীর বোটানিক্যাল নাম মিমোসা পুডিকা। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর নানামুখী উপকারিতার কথা উল্লেখ রয়েছে।
এটি এক ধরনের কাঁটাযুক্ত উদ্ভিদ। অন্যান্য গাছের চেয়ে এ গাছ অনেক বেশি স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। যার কারণে এ গাছ স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে এর পাতা অনেকটাই নেতিয়ে পড়ে।
কিন্তু কেন এমন হয়? উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞদের মতে, লজ্জাবতী গাছের পাতার গোড়া পানি ও খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ থাকে। এ অবস্থায় পাতা কেউ ছুঁয়ে দিলে সেটি সংকুচিত হয়ে নিচের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কারণ স্পর্শ থেকে গাছে এক ধরনের তড়িৎ প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে। এ তড়িৎ প্রবাহের কারণে পাতার গোড়ায় থাকা পানি ও খনিজ বের হয়ে আসে।
পাতার গোড়া থেকে পানি ও খনিজ বের হয়ে আসার কারণে লজ্জাবতীর কাণ্ড বা শাখাগুলো আর সোজা থাকতে পারে না। যে কারণে নুয়ে পড়ে। যে কারণে মানুষ মনে করে, লজ্জাবতী গাছ ভীষণ লাজুক।
লজ্জাবতী গাছ শুধু লাজুকই নয়, এর আছে অসংখ্য গুণও। লজ্জাবতীর বোটানিক্যাল নাম মিমোসা পুডিকা। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর নানামুখী উপকারিতার কথা উল্লেখ রয়েছে।
যেমন কফ দূর করতে, নাক ও কান থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে, ডায়রিয়া, যেকোনো প্রদাহ, জ্বালাপোড়া, আলসার, কুষ্ঠ কিংবা যোনি রোগ থেকে মুক্তি পেতে লজ্জাবতী গাছের ব্যবহার করা হয়।
শ্বাসকষ্ট, আলসার, অর্শ বা পাইলস, পেট ফাঁপা, বদহজম, যেকোনো ক্ষত সারাতে এ গাছের রস ভীষণ কাজে দেয়। এসব সমস্যার সমাধান পেতে ৫ মিলি পরিমাণ লজ্জাবতী পাতার পেস্ট সেবন করতে পারেন।
যাদের দাঁত ও মাড়িতে ক্ষত আছে তারা ২০ সেমি লম্বা লজ্জাবতী গাছের মূল পরিষ্কার করে পানিতে ১৫ মিনিট সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে কুলকুচি করুন। এ অভ্যাসে দাঁত ও মাড়ির ক্ষতও নিমিষে দূর হবে বলে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়ে থাকে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি