বৃহস্পতির উপগ্রহ গ্যানিমিডে পৃথিবীর চেয়েও বড় সমুদ্র রয়েছে!
ঢাকা: পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কীনা তা জানতে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় কোনো ক্লান্তি নেই। আর এজন্য তারা টেলিস্কোপে চোখ রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেয়ে থাকে সৌরজগতে। নানা হিসেব-নিকেশ মেলায়। নানা রকম সুক্ষ্ম সূত্রের আঁকিবুকি আঁকে। এভাবেই তাদের একটি হিসেব মিলে গেল। আর তা হলো, সৌরজগতে পানির অস্তিত্ব আছে।
একই সপ্তাহে গবেষকদের দুটো দল জানালো, সৌরজগতের দুটি উপগ্রহে পানি রয়েছে। এদুটো হলো, বৃহস্পতির উপগ্রহ গ্যানিমিড, আর শনির উপগ্রহ এনসেলাডাস।
নাসার বিজ্ঞানীরা দূরবীক্ষণ যন্ত্র হাব্ল স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে গ্যানিমিডে পানির বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন। আরেকদিকে তথ্যপ্রমাণ ঘেঁটে জার্মানির কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গ্যানিমিডের পৃষ্ঠে বরফের চাদরের নিচে লুকিয়ে আছে জলের ভান্ডার।
তারা দাবি করেন, গ্যানিমিডে প্রাণের অস্তিত্বও থাকতে পারে। এ উপগ্রহে যে বড় সমুদ্র রয়েছে তা পৃথিবীতেও নেই। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি শুক্রবার প্রকাশিত হয় দ্য জার্নাল অব জিওফিজিক্যাল রিসার্চ: স্পেস ফিজিক্সে।
নাসার সায়েন্স মিশন ডিরেক্টরেটের সহ-অধিকর্তা জন গ্রানসফেল্ড গণমাধ্যমকে জানান, সৌরজগতের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ গ্যানিমিডের নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্র রয়েছে। এ ক্ষেত্রটি উপগ্রহের দুই মেরুতে অরোরা তৈরি করে। উজ্জ্বল এ আলো আসলে উত্তপ্ত আয়নিত কণার ঢেউ।
তিনি আরো জানান, গ্যানিমিড এ উপগ্রহের খুব কাছাকাছি থাকায় বৃহস্পতির চৌম্বক ক্ষেত্রেরও প্রভাব রয়েছে। তাতে অরোরা কখনও বাড়ে, কখনও কমে। এ অবস্থা দেখেই বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্যানিমিডের পৃষ্ঠের নিচে বড় সমুদ্র রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা গণমাধ্যমকে জানান, হাব্ল উপগ্রহের ভূমির নিচের ছবি দেখতে পায়নি। এ যন্ত্র চাদরে মোড়া গ্যানিমিডের ছবি তুলেছে। এ ছবির দৌলতেই তারা দেখতে পেয়েছে অরোরা। আর যদি এ উপগ্রহ জমে বরফ হয়ে থাকত তবে অরোরার আলো ৬ ডিগ্রি কোণে বেঁকে বের হতো।
বিজ্ঞানীরা বলেন, তা কিন্তু হয়নি। দেখা যাচ্ছে, তা ২ ডিগ্রি কোণে বেঁকে নির্গত হচ্ছে। আর এ অবস্থা দেখেই বিজ্ঞানীরা অঙ্ক কষে হিসেব বের করেন। এরপর তারা জানান, বরফের চাদরের নিচে নোনাপানি থাকলেই এ কা- হতে পারে।
তারা জানান, বরফের চাদরের নিচে সমুদ্রের লবণ একটি পাল্টা চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে। এরই ফলে অরোরা ২ ডিগ্রি বেঁকে যায়।
এদিকে বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকা নেচারে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দাবি, শনির উপগ্রহ এনসেলাডাসে পানি থাকার দাবি কীভাবে করছেন বিজ্ঞানী? এমন কিছু তথ্য নাকি হাতে পেয়েছেন যাতে তারা পরিষ্কার, এনসেলাডাসে বেশ কিছু হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট রয়েছে।
তারা আরো জানান, বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, এ ভেন্টগুলোর তাপমাত্রা ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। পৃথিবী ছাড়া একমাত্র এনসেলাডাসেই এরকম অংশ রয়েছে। যেখানে অনবরত পাথরের সঙ্গে উত্তপ্ত জলরাশির রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটছে।
ইাসার গ্রহবিশেষজ্ঞ পিম্যাককি জানান, বছরের পর বছর লালগ্রহের পিছনে ছুটে বেরিয়ে তেমন কিছুই মিলল না। স্রেফ মৃত একটা গ্রহ। এখন সৌর জগতের শেষপ্রান্তে দেখা যাচ্ছে পানি রয়েছে। এ আবিষ্কারকে বিস্ময় বললেও অনেক কম বলা হবে! সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
নিউজবাংলাদেশ.কম/এটিএস
নিউজবাংলাদেশ.কম