ধেয়ে আসছে ৩ দৈত্যাকার গ্রহাণু
মাঝেমধ্যেই পৃথিবীর গা ঘেঁষে প্রচণ্ডবেগে বের হয়ে যায় গ্রহাণু। এসব গ্রহাণুর যে কোনো একটির সঙ্গে ধাক্কা লাগলেও টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারত পৃথিবী; ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি না হলেও অন্তত মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারত। বেশ কিছুদিন পরপর এসব গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ছুটে আসলেও এবার শুধু জুন মাসেই পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে তিন-তিনটি দৈত্যাকার গ্রহাণু।
মহাকাশবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গ্রহাণুগুলোর কোনো একটির সঙ্গে পৃথিবীর ধাক্কা লাগলেই মানবসভ্যতার বড়সড়র ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পৃথিবীকে লক্ষ্য করে ছুটে আসা প্রথম গ্রহাণুটি আসছে শনিবার। ভোর ৩টা ২০ মিনিট নাগাদ এটির পৃথিবীকে অতিক্রম করার কথা। ঐ সময় গ্রহাণুটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি এসে পৌঁছাবে। পৃথিবী থেকে মাত্র ৫.০৯ মিলিয়ন কিলোমিটার (৫৯ লাখ কিলোমিটার) দূর দিয়ে যাওয়ার কথা এই গ্রহাণুটির। গ্রহাণুটিকে Asteroid 2002 NN4 নামে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এটির ব্যাসার্ধ ৫৭০ মিটার। পাঁচটি ফুটবল মাঠ বা দুবাইয়ের এনটিসার টাওয়ারের জায়গা হবে এই আয়তনের মধ্যে। ঘণ্টায় ৪০ হাজার ১৪০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে আসছে এটি।
পৃথিবীর দিকে ছুটে আসা দ্বিতীয় গ্রহাণুটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে এসে পৌঁছাবে ঠিক তার ৬০ ঘণ্টা পর। দুই দিন ১২ ঘণ্টা পর ৮ জুন সোমবার বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে গ্রহাণুটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি আসবে। এই গ্রহাণুটিকে Asteroid 2013 XA22 হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবী থেকে ২.৯৩ মিলিয়ন কিলোমিটার (২৯ লাখ ৩০ হাজার কিলোমিটার) দূর দিয়ে যাবে এই গ্রহাণুটি। এর ব্যাসার্ধ ১৬০ মিটার। ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৫০ কিলোমিটার বেগে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে এটি।
তৃতীয় গ্রহাণুটি এই মাসের শেষ দিকে পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চলে আসবে। ২৪ জুন সকাল ৬টা ৪৪ মিনিটে এটি পৃথিবীর গা ঘেঁষে ছুটে যাবে। বিজ্ঞানীরা এই গ্রহাণুটিকে এক দশক আগে চিহ্নিত করেন। গ্রহাণুটির নাম দেন Asteroid 2010 NY65। পৃথিবী থেকে ৩.৭৬ মিলিয়ন কিলোমিটার (৩৭ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার) দূর দিয়ে যাওয়ার কথা এই গ্রহাণুটির। এর ব্যাসার্ধ ৩১০ মিটার। পৃথিবীর দিকে ঘণ্টায় ৪৬ হাজার ৪০০ কিলোমিটার বেগে ছুটে আসছে এই গ্রহাণুটি।
এই গ্রহাণুগুলোর আকার দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হলেও কী এমন ক্ষতি হবে পৃথিবীর? কিন্তু অবাক করার বিষয়—আজ থেকে ৬৬ মিলিয়ন বছর (৬ কোটি ৬০ লাখ) আগে পৃথিবীতে ১০ কিলোমিটার আয়তনের একটি গ্রহাণুর আঘাতে ডাইনোসর যুগের সমাপ্তি হয়েছিল। গ্রহাণুর শক্তিশালী আঘাতে পৃথিবী উপর্যুপরি অগ্নিকাণ্ড, আগ্নেয়গিরি, ভূমিকম্প ও সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে হারিয়ে গেছে ডাইনোসরসহ তখনকার পৃথিবীর বেশির ভাগ উদ্ভিদ ও প্রাণী।—টাইমস অব ইন্ডিয়া
নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ