News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ৪ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ০৬:০২, ৭ অক্টোবর ২০২০

এশিয়ার বৃহত্তম বটগাছটিকে ঘিরে গড়ে তোলা হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্র

এশিয়ার বৃহত্তম বটগাছটিকে ঘিরে গড়ে তোলা হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্র

জেলা সংবাদদাতা: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সুইতলা মল্লিকপুর গ্রামে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বটগাছটিকে ঘিরে গড়ে উঠছে পর্যটন কেন্দ্র। বৃহৎ এ বটবৃক্ষকে রক্ষাণাবেক্ষণ ও স্থানটিকে আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা করার লক্ষে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বন বিভাগ।

 

প্রাচীন এ গাছটির চারিদিকে ৩২৫ মিটারজুড়ে করা হচ্ছে প্রাচীর, বাথরুম, গেট, সেন্ট্রি পোস্ট, টিকিট কাউন্টারসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজ। ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ারুল আজীম আনারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও স্থানীয় প্রশাসন এবং বনবিভাগের সহযোগিতায় এখানে বর্তমানে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে এসব নির্মাণ কাজ চলছে।

 

কালীগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার এগোলে দেখা মিলবে এশিয়ার বৃহত্তম সুইতলা মল্লিকপুরের বটগাছ। ৮ নং মালিয়াট ইউনিয়নের বেথুলী মৌজায় বর্তমানে ১১ একর জমিজুড়ে রয়েছে এর বিস্তার। বর্তমানে পুরোটাই সরকারের খাস জমির অন্তুর্ভূক্ত হয়েছে। আনুমানিক ২৫০ থেকে ৩০০ ফুট  উচ্চতার বটগাছটি খন্ড খন্ড হয়ে ৫২টি বট গাছে রূপ নিয়েছে। তবে; এখনো প্রতিনিয়ত কাটা হচ্ছে গাছের ডালপালা।

 

 ১৯৮৪ সালে বিবিসি`র জরিপে  এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বটগাছের মর্যাদা লাভ করে এটি। এর অবস্থান ও নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানা জটিলতা এবং কিংবদন্তী। কারো কাছে সুইতলার বটগাছ, কারো কাছে সুইতলা মল্লিকপুরের বটগাছ আবার কারো কাছে বেথুলীর বটগাছ বলে এটি পরিচিত। প্রকৃতপক্ষে এর অবস্থান বেথুলী মৌজায় বলে জানান স্থানীয়রা ।

 

এলাকাবাসী জানিয়েছে, অযত্ন-অবহেলা, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও নানামুখী অত্যাচারের কারণে এই ঐতিহ্যবাহী বটগাছের অস্তিত্ব আজ নষ্ট হতে চলেছে। মল্লিকপুর গ্রামের বেলায়েত মিয়া বেঁচে থাকা পর্যন্ত তিনি এসব দেখাশুনা করতেন। তিনি নিজ সন্তানের মত ভালবাসতেন এই বটবৃক্ষকে।

 

১৯৮২ সালের পূর্ব পর্যন্ত এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বৃহত্তম বটগাছ বলে পরিচিতি ছিল কলকাতার বোটানিক্যাল গার্ডেনের একটি গাছ। পরবর্তীতে বিবিসি`র এক প্রতিবেদনে প্রচার হয় কালীগঞ্জ উপজেলার বেথুলী মৌজার সুইতলা মল্লিকপুরের বটগাছই এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বটগাছ। ১৯৯৮ সালের দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা সুশেন চন্দ্র রায় এর সহযোগীতায় সেখানে একটি ফুলের বাগান তৈরী করা হয়। বটগাছের চারপাশ ঘিরে প্রাচীর নির্মাণের ব্যবস্থাও করেন তিনি। 

 

এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম বটগাছের ঐতিহাসিক দিক বিবেচনা করে অনেক স্থান থেকে প্রতিনিয়ত দর্শনার্থীরা এখানে আসেন। এর গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৯০ সালে বটগাছের পাশেই প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি রেষ্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়। এর জন্য মল্লিকপুরের মৃত জহর আলীর স্ত্রী মোছাঃ কুন্টি বিবি ৩২ শতক জমি জেলা পরিষদের নামে দানপত্র লিখে দেন। তবে নানা জটিলতায় রেষ্ট হাউজটি চালু হয়নি আজো।

 

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, অনেক আগে এটি জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণে ছিল। পরে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি বন বিভাগের কাছে এটি হস্তান্তর হয়।

 

ঝিনাইদহ সামাজিক বনায়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ থেকে বন বিভাগ প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ বটগাছটি সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে ২০০৯ সালে। গাছটির আয়তন বৃদ্ধির জন্য নতুন করে দুই একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরেই  এর উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে।

 

উল্লেখ্য ২০১৪ সালের ১২ মে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা এশিয়ার এ বৃহত্তম গাছটি পরিদর্শন করেন।

 

 নিউজবাংলাদেশ.কম/এএইচকে

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়