News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
আপডেট: ১৭:৫৪, ২১ জানুয়ারি ২০২০

সংসারে প্রেম ফিরে আসুক

সংসারে প্রেম ফিরে আসুক

বিয়ের বেশ কয়েক বছর হয়ে গেছে। এখন কি প্রেমে ভাটা পড়ছে? জোয়ার আনার রয়েছে কিছু উপায়।
সকালে অফিসের জন্য তাড়াহুড়া, ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠানো, বাজার করা ইত্যাদি নানান কারণে সংসারজীবনে প্রেম-ভালোবাসা চাপা পড়ে যায়।
সম্পর্কবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে জানানো হয়, যখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শারীরিক সম্পর্কে ভাটা পড়ে (যা অবধারিতভাবে সব দম্পতির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য) তখনই একজন আরেকজনকে দোষারোপ করা শুরু করে।
তাই অভিযোগ না করে প্রেমের চর্চা করা শুরু করুন। কারণ সবকিছুর মতো ভালোবাসার জন্যেও চর্চা করতে হয়। আর চর্চা ছাড়া কোনো সম্পর্কই টেকসই হয় না।
‘ডেইট’ করুন, বাধ্যবাধকতা নয়
স্বামীকে চমকিত করার জন্য এমন কিছু করুন যেন মনে হয় তাকে কোনো কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে। যেমন: সন্তানকে স্কুল থেকে নিয়ে আসার পরিবর্তে বরং তাকে বলা যেতে পারে, ‘স্কুল থেকে সন্তানকে বাসায় পৌঁছে যেন দুপুরের খাবার খেয়ে যায়।’
অথবা, স্বামীকে নিয়ে তার পছন্দের সিনেমা দেখতে যাওয়া যেতে পারে। অথবা এমন কোনো জায়গায় একসঙ্গে যান যেখানে স্বামী যেতে পছন্দ করে। পাশাপাশি স্বামীর আনন্দগুলোও উপভোগ করুন। সবসময় শ্বশুরবাড়িই যে মধুর হাঁড়ি হবে তা কিন্তু নয়।

কোনো কারণ ছাড়াই আনন্দ উদযাপন
সংসারে পুরুষরা চায় তাকে যেন সব কাজে রাখা হয়। যদিও তারা ঘরদোর পরিষ্কার করা, রান্না করার মতো বিষয়গুলো এড়িয়ে চলে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাইকোথেরাপিস্ট এবং ‘দ্য পাথওয়ে টু লাভ’ বইয়ের লেখক জুলি অর্লভ বলেন, “যখনি কোনো পুরুষকে প্রয়োজনীয় ভাবা হয় এবং সম্মান দেওয়া হয়, তখনই সে খুশি হয়।”
তিনি পরামর্শ দিতে গিয়ে জানান, এরজন্য বেশি কিছু দরকার নেই। যেমন: স্বামীর কয়েকজন কাছের বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়কে দাওয়াত করে বুঝিয়ে দিন কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে। এর জন্য ১০ কোর্সের রান্নার দরকার নেই। এক-দুইটি পদের রান্নাই যথেষ্ট। স্বামীকে নিয়ে তার প্রিয় মানুষদের সঙ্গে সময় কাটানোতে ভালোবাসার সম্পর্ক আবার জেগে ওঠে।
ধন্যবাদের তালিকা
সংসারের অনেক ধরনের কাজ। কাজের ফাঁকে দুজন দুজনকে কখনও ধন্যবাদ দিয়েছেন কি? যদি না দিয়ে থাকেন তবে আজ থেকেই শুরু করুন।

ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া’র ন্যাশনাল ম্যারিজ প্রোজেক্টের এক গবেষণা থেকে জানা যায়, দীর্ঘ চুম্বনের সঙ্গে ধন্যবাদ বা থ্যাংক ইউ বলার কারণে সে (স্বামী/স্ত্রী) ‘অনেক খুশি’ হয়।

আসলে সবাই চায় ‘জব ওয়েল ডান’ বলে তাকে যেন ধন্যবাদ দেওয়া হয়।
শারীরিক সম্পর্কে নতুনত্ব
বেশিরভাগ স্ত্রী বাসার নিরাপদ পরিবেশেই স্বামীর সঙ্গে সহবাস করেন। এটা স্ত্রীর জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও, বেশিভাগ ক্ষেত্রেই এই সম্পর্কে নীরসভাব চলে আসে।

তাই যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিজ অ্যান্ড ফ্যামিলি থেরাপিস্ট ক্যারিন গোল্ডস্টেইন পরামর্শ দেন, এই পরিস্থিতিতে ‘স্বস্তিদায়ক পরিবেশ’ থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

সম্প্রতি একটি কনডম প্রতিষ্ঠানের করা জরিপ থেকে জানা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান দম্পতি ঘরের বাইরে ‘সেক্স’ করেন। এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ হয়ত সমুদ্র সৈকতে বা বন্ধুর বাসায় এবং এক চতুর্থাংশ তাদের শ্বশুর বাড়িতে এই কাজ করেন।
যদি আপনি বা আপনারা ওই ৩২ শতাংশের বাইরে হন আর শারীরিক সম্পর্কের আকর্ষণে ভাটা পড়েছে বলে মনে হয়, তবে বেড়িয়ে পরার এখনই সময়।

পছন্দের জিনিস মেরামত করুন
স্বামী প্রতিদিন একজোড়া জুতাই ব্যবহার করছেন। এমনকি সেই জুতার তলাও হয়ত ক্ষয়ে গিয়েছে। তাই বলে এমন নয় যে, তার আর জুতা নেই। আসলে তার জুতাটা পছন্দ আর পরতেও আরাম।
এরকম পরিস্থিতিতে তার জুতাটা বরং আপনি স্ত্রী হয়ে মুচির কাছ থেকে মেরামত করে নিয়ে আসুন। একইরকম কাজ স্ত্রীর জন্য স্বামীরও করতে পারেন।
প্রিয় জিনিসগুলো মেরামত করে দেওয়ার অর্থ হল, আপনি তার পছন্দ আর আরামের গুরুত্ব দিচ্ছেন।

হঠাৎ ছুটি
সংসারে হাঁপিয়ে উঠলে অনেক সময় দুজনকেই ছুটি নিতে হয়। এক্ষেত্রে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার কথা চিন্তা করতে পারেন, তবে সেটা হতে পারে একটি চমক।
কোথাও বেড়ানোর আয়োজন করে সঙ্গীকে চমকে দেওয়ার মধ্যেও সম্পর্ক উন্নতি ঘটে।
স্বামীকে আড্ডায় যেতে দিন
মেয়েলি আড্ডার যেমন একটা আনন্দ আছে, তেমনি ছেলেদের আড্ডার মধ্যেও একটা আলাদা ব্যাপার আছে। তাই অন্তত সময় করে স্বামীকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিন।

তারমানে এই নয় তারা কোনো বাজে কাজে ব্যস্ত থাকবে। বন্ধুদের নির্মল আড্ডার পর আপনার স্বামীকে টাটকা ও সতেজ হিসেবে ফেরত পাবেন, আর সেটার কৃতিত্ব স্ত্রী হিসেবে আপনারই।

আকর্ষণীয় টেক্সট বা ছবি
সারাদিনে বিভিন্ন কাজের মাঝে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাবার্তা খুব কমই হয়। এক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে ম্যাসেজ বা নিজের কোনো দুষ্টু ছবি আদান প্রদান করে সম্পর্কে চটুলতা বজায় রাখা যেতে পারে। আর এই যুগের মানসিকতা হলে ‘ডিজিটাল প্রেম’ তো লাগবেই।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অধিবাসী স্টিফেনি কস্টা জানান, তিনি ‘স্ন্যাপচ্যাট’ ব্যবহার করে মাঝে মাঝেই স্বামীকে তার উত্তেজক ছবি পাঠিয়ে থাকেন। আইফোন এবং অ্যান্ড্রয়েডের এই অ্যাপ’য়ের মাধ্যমে একটি ছবি কাউকে পাঠিয়ে সেটা কতক্ষণ দেখা যাবে তা নির্ধারণ করে দেওয়া যায়। এরপর ছবিটি আপনাআপনি ডিলিট হয়ে যাবে।

শখের বিষয়গুলো
বিয়ের আগে যেসব শখ আনন্দ দিত। বিয়ের পর হয়ত অনেকদিন সেসব শখ পূরণ করা হয়নি। এবার সময় এসেছে সেগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করার।
স্বামীর যদি ক্রিকেট খেলা পছন্দ হয় তবে সঙ্গী হিসেবে স্ত্রী হয়ে সেই খেলা দেখতে যেতে পারেন। অথবা ঘরেই খেলা দেখার সময় সঙ্গ দেওয়া যায়।
অনেকে মনে করেন এই ফাঁকে একটু নিজের মতো থাকা যাক। আসলে এগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দূরত্ব তৈরি করে।
স্বামী হিসেবে না হয় মাঝেমধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে ‘শপিং’ করতে গেলেন। শখ পূরণের মধ্যেও ভালোবাসার চর্চা করা যায়।
বিছানায় অন্তরঙ্গ হোন
এক্ষেত্রে স্ত্রীকেই সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে।
সাইকোথেরাপিস্ট অর্লভ বলেন, “ছেলেরা ‘ক্যান্ডেললিট ডিনার’য়ের চাইতে বিছানাতেই প্রেম খুঁজে পায় বেশি। আর আমরা নারীরা যেভাবে প্রেম অনুভব করি, পুরুষরা সেভাবে করে না।”
তিনি পরামর্শ দিতে গিয়ে জানান, অনেকদিনের বিবাহিত জীবনে শারীরিক সম্পর্কে যদি ভাটা পড়ে তবে প্রেমটাও উবে যেতে থাকে। তাই স্বামীকে চমক দিতে না হয়, আকর্ষণীয় অন্তর্বাস বা ‘লনজারি’ পরে স্বামীর সঙ্গে আরও নিবিঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলুন।

আরজে/

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়