সিডনিতে মাছ ধরতে গিয়ে ২ বাংলাদেশির মৃত্যু
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে মাছ শিকার করতে গিয়ে ঢেউয়ের ধাক্কায় মাহাদী খান (৩৩) ও মোজাফফর আহমেদ (৪২) নামে দুই বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে দেশটির পোর্ট ক্যাম্বেলার হিল সিক্সটিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আরও এক বাংলাদেশি আহতাবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন।
জানা গেছে, পোর্ট ক্যাম্বেলার হিল সিক্সটিতে দাঁড়িয়ে মাছ ধরছিলেন তারা। এ সময় আচমকা সমুদ্রের ঢেউয়ের ধাক্কায় মাহাদী পানিতে পড়ে গেলে অপর দুই বন্ধু তাকে রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
দেশটির এনএসডব্লিউ পুলিশ জানায়, উদ্ধারকারীরা মাহাদী খানকে সিপিআর দেয়ার সময় মারা যান তিনি এবং মোজাফফর আহমেদকে গুরুতর আহত অবস্থায় উলঙ্গং হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়। তৃতীয়জন রহমান এখনো হাসপাতালে আছেন। তবে পুলিশ রহমান সম্পর্কে কোনো তথ্য বাংলাদেশি কমিউনিটিকে জানায়নি।
তারা সিডনির ল্যাকেম্বা ও ওয়ালি পার্কের বাসিন্দা। মাহাদী ও মোজাফফর দু’জনই সিডনির ল্যাকেম্বা এলাকায় ব্যবসা করতেন।
স্থানীয় কমিউনিটি সূত্রে জানা গেছে, ত্রিশোর্ধ্ব মাহাদী মাছ শিকারের ক্ষেত্রে বড় রকমের আসক্তি ছিল। সপ্তাহে দুই একবার তিনি বিভিন্ন সৈকতে মাছ ধরতে যেতেন। ল্যাকেম্বায় তাদের ‘মাহি হালাল বুচারি শপ’ ও ‘ঘরোয়া কিচেন’ নামে পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে।
মাহাদী গত বছর বিয়ে করেছেন ও তার স্ত্রী জান্নাত বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। করোনার কারণে এখনো সিডনিতে আসেননি। মাহাদী ল্যাকেম্বায় তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন। তার দেশেরবাড়ি মুন্সীগঞ্জে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাহাদীর আগে থেকেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল এবং তিনি সাঁতারও জানতেন না।
চল্লিশোর্ধ মোজাফফর আহমেদ সিডনির ল্যাকেম্বায় ‘ডেইলি শপিং’ গ্রোসারি শপে কাজ করতেন। তিনি সিডনির ওয়ালিপার্কে বসবাস করতেন এবং তার দেশেরবাড়ি ফেনীতে। সে বন্ধু মাহাদীকে রক্ষা করতে যেয়ে ঢেউয়ের কারণে পাথরের সঙ্গে ধাক্কা খায়। মাথায় আঘাত পেয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
পুলিশের মাধ্যমে মাহাদীর মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর তার বাবা আকরাম হোসেন হার্ট অ্যাটাক করেন। স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনি আজ বিকেলে বাসায় ফিরেছেন।
মরদেহ দুইটি ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার পর তাদের জানাজার সময় জানানো হবে। দুই জনের মৃত্যুতে সিডনির বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।