News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:৪৪, ১১ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ০৬:৫১, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

২৫ বছরে ৫২ হাজার কোটি টাকার এনজিও সহায়তা

২৫ বছরে ৫২ হাজার কোটি টাকার এনজিও সহায়তা

ঢাকা: দেশের উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) মাধ্যমে ২৫ (১৯৯০-২০১৪ নভেম্বর পর্যন্ত) বছরে বাংলাদেশে এসেছে ৫২ হাজার ৮৭৬ কোটি ৩ হাজার ৫৫০ টাকার বৈদেশিক সাহায্য। আওয়মী লীগের ৩বারের শাসনামলে (২০১৪ নভেম্বর পর্যন্ত) এসেছে ৩৪ হাজার ৫৭০ কোটি ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯১ টাকা। অপরদিকে বিএনপির ২ বারের শাসনামলে এসেছে ১২ হাজার ৩৬৩ কোটি ৫৫ লাখ ৪ হাজার ৬০৬ টাকা।

এ টাকার বিপরীতে বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল  ৬৪ হাজার ৭৯১ কোটি ৫৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৪ টাকার। এনজিও বুরো ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব  তথ্য জানা গেছে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এরশাদ সরকারের পতনের মূহুর্তে ১৯৯০ সালের জুন পর্যন্ত এনজিও সেক্টরে বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ ছিল মাত্র ২২ কোটি টাকা। যা ৮টি প্রকল্পের মাধ্যমে এসেছিল। তখনকার সময়ে দেশে নিবন্ধিত এনজিওর সংখ্যাছিল ৩৪৭টি । এর মধ্যে ২৬৭টি ছিল স্থানীয় এবং বাকি ৮০টি ছিল বিদেশী।

বিএনপির শামনামলে (৯০-৯১ থেকে ৯৫-৯৬ অর্থ বছরে) এনজিও সেক্টরে এসেছিল ৪ হাজার ২৫৫ কোটি ৫ লাখ৬৩ হজার ৯১৫ টাকা। বিপরিতে অনুমোদিত অর্থের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ১৩৯কোটি ৫৪ লাখ টাকা (প্রায়)।

এ সময়ে বছরে ৬৬৮ টি এনজিও নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে দেশি ৬১১টি, ৫৭ টি বিদেশি নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে ৩৫টি এনজিওর।

আওয়ামী লীগের প্রথম (৯৬-৯৭ থেকে ২০০০-২০০১ অর্থ বছরে) শাসনামলে দেশে এনজিও সেক্টরে বৈদেশিক সহায়তা এসেছে ৫ হাজার ৬২৯ কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার ২৭৭ টাকা। একই সময়ে অনুমোদিত অর্থের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৩৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা (প্রায়)। নতুন এনজিও নিবন্ধন দেয়া হয়েছিল ৬০৪ টি এর মধ্যে ৫৬৮ টি দেশি এবং ৩৬ টি বিদেশি। প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয় ৪১৪০ টি। তবে উল্লেখ্য যে, ১৯৯৮ সালের বন্যার সময়ে এনজিওগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক বা এনজিও বুরোর মাধ্যম ছাড়াই সরাসরি সাহায্য নিয়েছে।

দ্বিতীয় মেয়াদে বিএনপি শাসনামলে (২০০১-২০০২ থেকে ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে) অর্থাৎ ৫ বছরে এনজিও খাতে বৈদেশিক সহায়তা এসেছে ৮ হাজার ১০৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যা বিএনপির প্রথম শামনামলের চেয়ে  ৩ হাজার ৮৮৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বেশি। এ সময়ে নতুন করে এনজিও নিবন্ধন দেয়া হয়েছিল ৪৩৯ টির। এর মধ্যে দেশি ৪২২, বিদেশি ১৭ টি। মোট ৪৫৫২ টি প্রকল্পের মাধ্যমে এসব সহায়তা এসেছে।

বিএনপি সরকারের শেষে  সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকরের (২০০৬-২০০৭ থেকে ২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরে) সময়ে দেশে প্রলয়ংকারী ঘুর্নিঝড় সিডর আঘাত হানে বাংলাদেশের উপর।  ফলে সিডর দুর্গতদের সহায়তায় ২ বছরে প্রায় ৫ হাজার ৯২০ কোটি ৮ লাখ ৭৪ হাজার ২৪৪ টাকার সহায়তা আসে এনজিও সেক্টরে। ২৩৭০ টি প্রকল্পের মাধ্যমে এ সহায়তা দেয়া হয়েছিল। এ সময়ে ৬ হাজার ৬৪৬ কোটি ৮ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দাতা সংস্থারা।   দেয়া হয়েছিল ২৪৫ টি দেশি ও ১৬ টি বিদেশিসহ ২৬২ টি এনজিওর নিবন্ধন।

আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শাসনামল ২০০৮-২০০৯ থেকে ২০১৪-১৫ (নভেম্বর ২০১৪পর্যন্ত) ৭ অর্থ বছরে এনজিও সেক্টরে সাহায্য এসেছে ২৮ হাজার ৯৪০ কোটি ৮৪ লাখ ৫৫ হাজার ১১৪ টাকা। এ সময়ে প্রতিশ্রুত অনুমোদিত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ৭১৯ কোটি ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ৩৩১ টাকা।
 
এনজিও বুরোর উপ-পরিচালক ও মুখপাত্র একেএম মোয়াজ্জেম হোসেন নিউজ বাংলাদেশকে জানান, “বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনজিও বুরো বিভিন্ন নীতিমালা তৈরির ফলে এনজিও সেক্টরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করার কারণে দাতা সংস্থার আস্থা ফিরে এসেছে। আর্থিক অনুদানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দাতা সংস্থাও নির্দিষ্ট প্রকল্পে সহায়তা দিতে পারছে।”

এনজিও’র কাজের দুর্নীতি বিষয়ে তিনি বলেন, “এনজিও বুরোর সরাসরি মনিটরিং থাকার কারণে এই সেক্টরে দুর্নীতি কমেছে। এক ফান্ডের টাকা অন্য ফান্ডে স্থানান্তর করার সুযোগ নেই। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকেই বাধ্যতামুলকভাবে বার্ষিক প্রতিবেদনের পাশাপাশি প্রতি ৩ মাস পরপর আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হচ্ছে।”

উল্লেখ্য, নিউজে অর্থ বছর গণনা করা হয়েছে।


নিউজবাংলাদেশ.কম/টিআইএস/এএইচকে


 
 

 

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়