রণবী-জ্যোতির জাপান যাত্রা ব্যাহত!
ঢাকা: জাপান সরকারকে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জাপান যেতে প্রস্তুত বাংলার এক জোড়া রয়েল বেঙ্গল টাইগার রণবী ও জ্যোতি। এরইমধ্যে এ বাঘ দু’টিকে জাপানে পাঠানোর জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। অথচ এখন পর্যন্ত জাপান সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় আটকে আছে বাঘ দুটির জাপান যাত্রা।
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায় নিউজবাংলাদেশকে জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পরেই ঢাকা চিড়িয়াখানার একটি ও সাফারি পার্কের একটি বাঘ এনে চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে। এ বাঘ দু’টির মধ্যে ভালো সম্পর্ক তৈরির জন্য একই খাঁচায়ও রাখা হয়েছে। বাঘ পরিবহন উপযোগী করে দু’টি খাঁচাও তৈরি করা হয়েছে। তাদের প্রস্তুতির বিষয়টি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের ১৫ জুলাই প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কেএফএফ জেসমীন আখতার স্বাক্ষরিত চিঠিতে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালককে বাঘ পাঠানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়। এর পর ১৬ জুলাই প্রাণিসম্পদ অধিদফতর এ বিষয়ে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে। এ কমিটিই রণবী ও জ্যোতিকে জাপান পাঠানোর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে।
ঢাকা চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. মাকসুদুল হাসান হাওলাদার জানান, জাপানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক হিসেবে এ রয়েল বেঙ্গল টাইগার দু’টিকে প্রস্তুত করা হয়েছে। বাঘ দু’টির মধ্যে একটি ঢাকা চিড়িয়াখানার রণবী, অন্যটি কক্সবাজার সাফারি পার্কের জ্যোতি।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক আরো জানান, বাঘ দু’টিকে কীভাবে পাঠানো হবে, কোন এয়ারপোর্টে নামবে এসবসহ জাপান সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে অনুমোদন পাওয়ার পরই বাঘ পাঠানো হবে।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৯টি বাঘ আছে। এর মধ্যে ৪টি অসুস্থ, একটি বয়স্ক। বাকি দু’টি জুটি সানি ও ঊর্মিলা এবং শুভ ও সখিনা চিড়িয়াখানার এখন মূল আকর্ষণ। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ছোট-বড় মিলিয়ে ১০টি বাঘ রয়েছে। আর ২০১২ সালে শ্যামলী থেকে র্যাবের উদ্ধার করা তিনটি বাঘ বন বিভাগের কাছে রয়েছে।
ঢাকা চিড়িয়াখানার (বৃহৎ প্রাণী শাখা) কর্মকর্তা মো. শামীম আহমেদ জানান, রণবী ও জ্যোতিকে সব সময় নজরদারিতে রাখা হয়েছে। প্রতিদিনই শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে পুষ্টিকর খাবার ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে রয়েল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে প্রায় ৫ শ’। বেসরকারি জরিপে বলা হচ্ছে, বাঘের সংখ্যা ২ শ’র বেশি নয়। ২০০৪ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞরা যৌথভাবে পরিচালিত জরিপ থেকে ৪৪০টি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের উপস্থিতি মিলেছে। বর্তমানে বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের বনে রয়েল বেঙ্গল টাইহার রয়েছে। অন্য দেশগুলো হলো- ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, ভুটান, নেপাল ও রাশিয়া। এসব দেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বাঘ টিকে আছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের মে মাসে জাপান সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে জাপানকে এক জোড়া রয়েলে বেঙ্গল টাইগার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/টিআইএস/এফই
নিউজবাংলাদেশ.কম