News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৮:১৫, ২৫ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ১৮:১৩, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

মনোনয়ন কিনতে পিছিয়ে নেই বিএনপি নেতারাও

মনোনয়ন কিনতে পিছিয়ে নেই বিএনপি নেতারাও

ঢাকা: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়ন কেনা চলছে পুরোদমে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্রভাবে কিনছেন অনেকে।

বিএনপির পক্ষ থেকে এখনও নির্বাচনকে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত না নিলেও দলটির নেতারা মনোনয়ন কিনতে পিছিয়ে নেই। কাউন্সিলর পদে বিএনপির অনেকে মনোনয়ন কেনার পাশাপাশি এবার মেয়র পদেও মনোনয়ন তুলেছেন দলটির প্রভাবশালী একাধিক নেতা।

বুধবার ঢাকার দুই সিটি করপোরশনে মেয়র পদে বিএনপির তিনজন মনোনয়ন কিনেছেন। এ নিয়ে বুধবার পর্যন্ত মেয়রের টিকিট নিয়েছেন ৪৪ জন। কাউন্সিলরে মনোনয়ন তুলেছেন ১৪৮৩ জন। এরমধ্যে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে রিটার্নিং অফিস থেকে শোকজ দেয়া হয়েছে ৪৪ জনকে।

মেয়র পদে ঢাকা দক্ষিণে নিয়েছেন ২৭ জন ও উত্তরে নিয়েছেন ২১ জন মনোনয়ন নিয়েছেন। সাধারণ কাউন্সিলরদের মধ্যে দক্ষিণে ৯১৩ এবং উত্তরে ৫৭০ জন মনোনয়ন তুলেছেন। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিল হিসেবে মোট মনোনয়ন গেছে ২৮৬ জনের কাছে। এরমধ্যে ঢাকা দক্ষিণে ১৬৮ ও উত্তরে ১১৮ জন এ টিকিট কিনেছেন।

বুধবার ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবদুস সালাম। মহানগর বিএনপির যুগ্মসম্পাদক কাজী আবুল বাশারও মনোনয়ন কিনেছেন দক্ষিণ থেকে। তবে তারা কেউই স্বশরীরে উপস্থিত হননি। তাদের প্রতিনিধিরা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে এসে সংগ্রহ করেন।

উত্তরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু মনোনয়ন পত্র কিনেছেন। তার পক্ষে ছেলে তাফসির এম আউয়াল ও তাবিখ এম আউয়াল এ মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন। এর  আগে মঙ্গলবার বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর পক্ষ থেকেও মনোনয়ন কেনা হয়।

অন্যদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় দুই সিটি কর্পোরেশনে ৪৪ সম্ভাব্য প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে রিটার্নিং অফিস। এর মধ্যে উত্তরে ৬ জন ও দক্ষিণে ৩৮ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনী এলাকায় ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সারওয়ার আলম এবং মোরারজী দেশাই বর্মণকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

বিএনপির পাশপাশি দক্ষিণে মেয়র পদে মনোনয়ন নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরাও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন নিতে এসে নিউজবাংলাদেশ.কমকে বলেন, “আমরা প্রচলিত রাজনীতির পরিবর্তে আদর্শিক পরিবর্তনে বিশ্বাসী বলেই রাজনীতিতে পৃথক একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম তৈরি জন্য কাজ করছি। নগরবাসীকে সুন্দর শহর উপহার দিতে আমার প্রচেষ্টা থাকবে।”

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের সাংগঠনিক সচিব মাওলানা মুহাম্মদ মাসউদ হোসাইন মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন নিয়েছেন। এছাড়াও দলটির একাধিক সদস্য কাউন্সিল পদের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

জানা গেছে, ইসলামী আন্দোলন মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদেও প্রার্থী দেবে। আগামী দুই দিনের মধ্যে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করবে দলটি।

এদিকে সবুজবাগ থানা বিএনপির আহ্বায়ক শামসুল হুদা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নিজেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, “আশা করি দল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিবে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে তখন মনোনয়নের বিষয়টি বিবেচনা করবো।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার প্রায় প্রত্যেক ওয়ার্ডেই বিএনপির নেতা কর্মীরা নিজেদের মতো করে মনোনয়ন সংগ্রহ করছেন। ভেতরে ভেতরে অনেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দলীয় ঘোষণা এলে যেনো পিছিয়ে থাকতে না হয়, সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

ডিসিসি নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণা চালানো, পোস্টার লাগানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুই সিটির ৪৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জন উত্তরের এবং ৩৮ জন দক্ষিণের।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং অফিসার মো. শাহ আলম বলেন, “এ পর্যন্ত ৬ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আমারা আশা করছি, প্রার্থীরা সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আচরণবিধি মেনে চলবেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে কোনও প্রার্থীকে এক শতাংশও ছাড় দেয়া হবে না। যারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি নজরে এলেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হচ্ছে।”

ঢাকা দক্ষিণের রিটার্নিং অফিসার মিহির সারওয়ার মোর্শেদ বলেন, “এ পর্যন্ত সম্ভাব্য ৩৮ জন প্রার্থীকে অভিযোগের প্রমাণসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ জন ব্যাখ্যা দিয়েছেন, দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা অঙ্গিকার করেছেন ভবিষ্যতে আচরণবিধি মেনে চলবেন। আমাদের ১৯ জন সহকারী রিটারিং অফিসার মাঠ পর্যায়ে তদারকি করছেন। কোনো প্রার্থীর অনিয়ম পেলেই ছবি তুলে রাখছেন। আমরা সব কিছুই দেখছি, সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে সম্ভাব্য অনেক প্রার্থী রিটার্নিং অফিসে এসে মৌখিকভাবে ক্ষমা চেয়ে গেছেন। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতেই বেশি শোকজ দেয়া হচ্ছে। উত্তরে সে তুলনায় শোকজ দেয়ার সংখ্যা কম।

তফসিল অনুযায়ী ২৯ মার্চের মধ্যে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকরা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে হবে। ৯ এপ্রিলের মধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা যাবে। আগামী ২৮ এপ্রিল ঢাকার দুটি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে একসঙ্গে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএ/এমএম

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়