News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:২২, ১৯ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ১৩:৫১, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

ভোটের পোস্টার

একদিকে সরছে, অন্যদিকে লাগছে

একদিকে সরছে, অন্যদিকে লাগছে

ঢাকা: তফসিল ঘোষণার পর থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের পোস্টার, বিলবোর্ডসহ সব ধরণের প্রচারণা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ নির্দেশ মেনে একদিকে বিলবোর্ড সরানো হলেও অন্যদিকে লাগানো হচ্ছে নতুন নতুন পোস্টার ও ফেস্টুন। নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থি এ কাজটি প্রকাশ্যেই করতে দেখা অনেক প্রার্থীর লোকজনকে। শুক্রবার রাত ১২টায় এ ৪৮ ঘণ্টা শেষ হবে।

গত বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ তফসিল ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার পরদিন বৃহস্পতিবার রাজধানী বিভিন্নস্থানে বিলবোর্ড সরাতে দেখা গেছে। তবে রাজধানীর অনেক এলাকায় আবার সম্ভাব্য প্রার্থীদের নতুন নতুন পোস্টার ও ফেস্টুন লাগানোর দৃশ্যও চোখে পড়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা (উত্তর) সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হতে দৌড়ঝাঁপ করছেন ঢাকা-১৫ আসনের সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী বিজয় সরণী এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে করে তার লোকজনকে বড় বড় ফেস্টুন লাগাতে দেখা গেছে। বিজয়সরণী থেকে চন্দ্রিমা উদ্যান হয়ে মিরপুর-১০ নাম্বারের পথে এ ফেস্টুন লাগান তারা।

ফেস্টুন কর্মী রুবেলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নিষেধ কি না জানি না। আমাগোরে লাগাইতে কইছে, আমরা লাগাইতাছি।”

উত্তর সিটিতে একমাত্র নারী প্রার্থী হতে যাচ্ছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর হেলেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্নস্থানে তার নতুন পোস্টারে ছেয়ে গেছে। ‘প্রয়োজন পরিবর্তন’ স্লোগান লেখা নতুন এ পোস্টার রাজধানীর ফার্মগেট, মহাখালী, বনানী ও গুলশান এলাকায় দেখা গেছে।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হকের নতুন পোস্টার লাগাতে দেখা গেছে মহাখালী এলাকায়। এ সময় হোসেন নামে একজন নিউজবাংলাদেশকে বলেন, “স্যারের পোস্টারে ঢাকা ঢাইকা ফেলুম। আওয়ামী লীগে প্রার্থী। ক্যাডা মানা করবো?”

তবে বনানী এলাকা থেকে আনিসুল হকের কয়েকটি ফেস্টুন সরিয়ে ফেলা হয়।

একই দৃশ্য দেখা গেছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকাতেও। সে এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকনের লোকজনকে চানখারপুল ও ফুলবাড়িয়া এলাকায় পোস্টার ও ফেস্টুন লাগাতে দেখা গেছে। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, “অনেক পোস্টার আজকেই লাগানো হইছে। এইগুলা সব (ইশারায় দেখিয়ে বলেন) আইজ লাগাইছে।”

জাতীয় পার্টি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন সবার কাছে ‘পোস্টার মিলন’ হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনের আগেও মাঠের রাজনীতিতে খুব একটা সরব দেখা না গেলেও পোস্টারে বরাবরই সরব তিনি। বুধবার রাতেও রাজধানীর পুরানা পল্টন ও মতিঝিল এলাকায় তার নতুন পোস্টার লাগাতে দেখা গেছে। এসব পোস্টারে তিনি প্রতীক বরাদ্দের আগেই সবার ‘সুচিন্তিত রায়’ চেয়েছেন।

ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের লোকজনকেও বড় বড় ফেস্টুন লাগাতে দেখা গেছে পুরান ঢাকার বাবু বাজার এলাকায়। ‘ছিলাম, আছি, থাকবো’ স্লোগানের এসব ফেস্টুন লাগানো হয়েছে রাস্তার দুপাশে। সে এলাকায় হাজী সেলিমের কয়েকটি বিলবোর্ড আগে থেকেই লাগানো ছিলো।

এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতিদিনই নিজেদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন নতুন করে। ইসির নির্দেশ অনুযায়ী পোস্টার ও বিলবোর্ড দুএকটি খুলে ফেললেও নতুন নতুন লাগিয়ে যাচ্ছেন প্রতিদিনই।

প্রচারণা বন্ধ না করলে আইনী ব্যবস্থা
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আগাম প্রচারণা বন্ধ না করলে তিন সিটি নির্বাচনের সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসি। বৃহস্পতিবার ইসির যুগ্ম সচিব জেসমিন টুলি স্বাক্ষরিত এ বিষয়ক একটি চিঠি রিটার্নিং অফিসার, বিভাগীয় কমিশনার ও র‌্যাব মহাপরিচালকের পাঠানো হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২১মার্চ রাত ১২টার মধ্যে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচারণামূলক বিলবোর্ড, পোস্টার, ব্যানার সরিয়ে না ফেললে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে কমিশনকে অবহিত করতে নির্দেশও দেয়া হয়েছে নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ।

পাশাপাশি আগাম প্রচারণা বন্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় মাইকিং করে প্রার্থীদের আচরণবিধি পালনের বিষয়ে সচেতন করতে বলা হয়েছে এ চিঠিতে।

নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০১০ (সংশোধিত) অনুযায়ী কোনো প্রার্থী বা তার পেক্ষ কোনো ব্যক্তি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫০ হাজার টাকা বা ছয় মাসের জেল দেয়ার বিধান রয়েছে। প্রার্থীতা বাতিলেরও ক্ষমতাও রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএ

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়