অঙ্গীকারের ফাঁকা বুলি, মাঠে নেই আব্বাস-সোহেল
ঢাকা: গত ১৮ ডিসেম্বর ছাত্র কনভেনশনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সামনে নেতকর্মীদের নিয়ে রাজপথের আন্দোলনে সামনের কাতারে থাকার অঙ্গীকার করেছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস। কিন্তু বাস্তবে এর প্রমাণ মিলেনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে সবার আগে সামনের কাতারে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন আব্বাস। কিন্তু আন্দোলনের ৩ মাস পার হলেও হাবিব উন নবী খান সোহেলকে কয়েক সেকেন্ডের জন্য দুএকটি ঝটিকা মিছিলে দেখা গেলেও আন্দোলনের মাঠে দেখা যায়নি মির্জা আব্বাসকে।
অদৃশ্যস্থান থেকে শুধুমাত্র প্রেস বিজ্ঞপ্তি আর বিবৃতিতে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন ঢাকা মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব আব্বাস-সোহেল।
১৮ ডিসেম্বর ছাত্র কনভেনশনে মির্জা আব্বাস তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, “আমি কথা দিচ্ছি, গতবার ঢাকায় যা হয়েছে, এবার তা হবে না। এবার ঢাকায় আন্দোলন হবেই। নব্বইয়ের মতো এবার আমাদের রাস্তায় পাবেন। গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন, আন্দোলনের ব্যর্থতার জন্য দয়া করে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিকে দোষ দেবেন না। আমরা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। এবার সবার আগে ঢাকা মহানগরকে আন্দোলনের সামনের কাতারে পাবেন ইনশাআল্লাহ।”
গত বছরের পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলনে খোকা-সালামের কমিটি ঢাকা মহানগরে আন্দোলন জোরদার করতে পারেনি। এই ব্যর্থতার দায়ে খোকা-সালামকে বাদ দিয়ে ‘মাস্টার প্লান’ করে ঢাকা মহনগরের দায়িত্ব দেয়া হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেলকে। কিন্তু পাঁচ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া লাগাতার আন্দোলনে সেই ‘মাস্টার প্লানের’ ছিটে ফোঁটাও রাজধানীতে বাস্তবে রূপ দিতে পারেনি আব্বাস-সোহেল।
এ নিয়ে মহানগর নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের অন্ত নেই। তারা বলছেন, কোথায় আব্বাস-সোহেল, কেন তারা আত্নগোপনে থাকবেন, রাজপথের আন্দোলনে কেন তারা অনুপস্থিত। নেতাকর্মীরা আন্দোলনের দিক নির্দেশনা চেয়ে ফোন করেও তাদের কাউকেই পাচ্ছেন না। সকল যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ। তাহলে কি লাভ হলো নতুন কমিটি দিয়ে।
মহানগরের থানা-ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা বলছেন, ঢাকায় আন্দোলন করবে ঢাকা মহানগর বিএনপি’র নেতৃত্ব দেবেন আব্বাস-সোহেল। আর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল সহযোগি হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত মির্জা আব্বাস ও সোহেল আন্দোলনের সময় উধাও। তাদের হারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আব্বাসের কারণে মহানগর নেতাকর্মীরা হরতাল-অবরোধে মাঠে নামছেন না বলে অভিযোগ করেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে বারবার আব্বাস-সোহেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।
তবে আব্বাস ও সোহেলের ঘনিষ্টজন দাবি করেছেন, তারা ঢাকা শহরেই আছেন। সরকারের নির্যাতন থেকে বাঁচার কৌশল হিসেবে তারা নিরাপদ অবস্থান থেকে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন।।
তারা বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীরা এজন্য কিছুটা হতাশ হলেও আব্বাস ও সোহেল ভাই তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। মাঠে নেমে মির্জা ফখরুলসহ অন্য নেতাদের মতো গ্রেফতার বা আটক হলে কি মহানগর বিএনপির আন্দোলন সফল হয়ে যাবে এমন প্রশ্ন রাখেন তারা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/আরআর/এএইচকে
নিউজবাংলাদেশ.কম