প্রবীণ অভিনেতা সিরাজুল ইসলাম আর নেই
ঢাকা: বিশিষ্ট অভিনেতা সিরাজুল ইসলাম আর নেই। মঙ্গলবার সকাল নয়টায় রাজধানীর নিকেতনের বাসায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ... রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
বেশ কয়েক বছর ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে চলচ্চিত্র কিংবা নাটকে তিনি অনিয়মিত ছিলেন।
তিনি স্ত্রী সৈয়দা মারুফা ইসলাম, এক ছেলে মোবাশ্বেরুল ইসলাম, দুই মেয়ে ফাহমিদা ইসলাম ও নাহিদা ইসলামসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বাদ আসর নিকেতন মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। নিকেতন জামে মসজিদে নামাজে জানাজার পর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
সিরাজুল ইসলামের জন্ম ১৯৩৮ সালের ১৫ মে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর তারা বাংলাদেশে চলে আসেন। ঢাকার বাংলাবাজারে কিশোরী লাল জুবিলী স্কুলে পড়াকালীন মঞ্চে অভিনয়ে মনোযোগী হয়ে ওঠেন তিনি। সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ বেতারে ‘রূপালী চাঁদ’ নাটকে একজন স্কুল শিক্ষকের চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। দুই বছরের মাথায় বেতারে প্রযোজক হিসেবে তার প্রথম প্রযোজনা ছিলো নাটক ‘বৃষ্টি’।
‘রাজা এলো শহরে’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে সিরাজুল ইসলামের অভিষেক। এ ছবিতে তিনি একজন অধ্যাপকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৮৫ সালে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘ চন্দ্রনাথ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।
তিনশ’রও অধিক ছবিতে সিরাজুল ইসলাম অভিনয় করেছেন।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে- ‘নাচঘর’, ‘অনেক দিনের চেনা’, ‘শীত বিকেল’,‘বন্ধন’, ‘ভাইয়া’, ‘রূপবান’, ‘উজালা’, ‘১৩ নং ফেবু ওস্তাগার লেন’ , ‘নয়নতারা’, ‘আলীবাবা’, ‘চাওয়অ পাওয়া’ , ‘গাজী কালু চম্পাবতী’, ‘নিশি হলো ভোর’, ‘সপ্তডিঙ্গা’, ‘মোমের আলো’, ‘ময়নামতি’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘দর্পচূর্ণ’, ‘ জাহা বাজে শাহনাই’, ‘বিনিময়’, ‘ডুমুরের ফুল’ ইত্যাদি।
১৯৮৫ সালে ‘চন্দ্রনাথ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান সিরাজুল ইসলাম।
১৯৮০ সালে সিরাজুল ইসলাম প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ছবিটি প্রযোজনা করেছিলেন জাফর। এ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন শাবানা, বুলবুল আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, গোলাম মুসত্মাফা, রানী সরকার, সুমিতা দেবী, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। এ ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সফল হবার কারণে একই প্রযোজক তাকে দিয়ে ১৯৮১ সালে নির্মাণ করেন ‘সোনার হরিণ’ ছবিটি।
এ ছবিতেই প্রথম ও শেষবারের মত একসাথে অভিনয় করেন শাবানা, কবরী, ববিতা ও সুচরিতা । ছিলেন রাজ্জাক (দ্বৈত চরিত্রে), বুলবুল আহমেদ, গোলাম মুসস্তাফা, আনোয়ার হোসেন, আনোয়ারা ও সুমিতা দেবীর মত শক্তিমান অভিনেতা অভিনেত্রী। এ ছবিটিও ব্যাপক ব্যবসা সফল হয়।
চৌধুরী সহিউল সাকীর ‘একটি অসমাপ্ত কবিতার গল্প’ নাটকে সর্বশেষ অভিনয় করেছেন তিনি। নাটকে ‘মোহনী মোহন’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যিনি ছিলেন তিন তিনটা মহাযুগের সাক্ষী।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসজে
নিউজবাংলাদেশ.কম