অনন্যার বাবা-মা হানিমুন করেছেন বাংলাদেশে
ফাইল ছবি
ক্রমে উজ্জ্বল হয়ে উঠছেন বলিউডের উঠতি তারকা চাঙ্কি পাণ্ডের মেয়ে অনন্যা পাণ্ডে। খুব অল্প সময়েই দর্শকের মন জয় করেছেন তিনি।
‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ২’ দিয়ে বড় পর্দায় তার অভিষেক হয়। তারপর একের এক কাজ করে নিজেকে চৌকস করে তুলছেন তিনি।
পরিচিতি মুম্বইয়ে হলেও অনন্যার সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের গভীর যোগ। একবার একটি টক শোয়ের মঞ্চে নিজেই এই কথা বলেন বাবা চাঙ্কি পাণ্ডে।
তার বাবা ভারতীয় অভিনেতা চাঙ্কি পান্ডে একসময় অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের ছবিতে। এমনকি হানিমুনও করেছেন এখানে।
তবে অনন্যার জন্মের পর থেকে চাঙ্কির ক্যারিয়ার আর আগের মতো ছিল না। একসময় নায়ক হিসেবে অভিনয় করা চাঙ্কিকে রীতিমতো ‘যে কোনো’ কাজ খুঁজতে হয়েছে। জন্মের পর থেকেই অনন্যা দেখেছেন তার বাবার ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন। জ্ঞান হওয়ার পর দেখেছেন, তার বাবার ক্যারিয়ার শেষ। বাবার লড়াই থেকে অনেক কিছু শিখেছেন এই অভিনেত্রী।
চাঙ্কি পাণ্ডের ক্যারিয়ার শুরু হয় আশির দশকে। নব্বইয়ে তিনি তারকা! অনন্যার জন্ম ১৯৯৮ সালে। সেই থেকে হাতে কাজ কমতে থাকে চাঙ্কির। বাবার জীবনের চড়াই-উতরাই দেখেও অভিনয়কেই পেশা হিসাবে বেছে নেন অনন্যা। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে বলিউডে ধীরে ধীরে নিজের পায়ের নিচে মাটি শক্ত করছেন তিনি। চলতি বছর পর পর তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে তার। সুপারহিট না হলেও, তিনটি থেকেই প্রশংসা কুড়িয়েছেন অনন্যা।
ভারত-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের ভেতর বাংলাদেশের সঙ্গে যোগসূত্রের কথা জানিয়েছেন অনন্যার বাবা চাঙ্কি। টানা পাঁচ বছর বাংলাদেশের সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি। ভারতের থেকে তিনি বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বাংলাদেশি দর্শকদের মধ্যে। একসময় মুম্বাই ছেড়ে ঢাকায় থাকতে শুরু করেন অভিনেতা।
তিনি জানান, ১৯৮৭ সালে বলিউড ছবি ‘আগ কি আগ’-এ অভিনয় করেছিলেন চাঙ্কি। সেটিই ছিল তার ডেবিউ ছবি। ছবিতে বিজয় সিংয়ের চরিত্রে কাস্ট করা হয় চাঙ্কিকে। তারপর থেকে একের পর-এক ‘খতরো কে খিলাড়ি’, ‘তেহজিব’-এর মতো বলিউড ছবিতে অভিনয় করেন চাঙ্কি। নায়ক হিসেবে এদেশের ছবিতে খুব বেশি দেখা যায়নি অভিনেতাকে। মূলত পার্শ্বচরিত্রেই কাজ করেছেন।
বলিউডে সাফল্য না পেয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশে চলে যাবেন। চাঙ্কির এক বন্ধুই তাকে সেখানকার ছবির জগতে নিয়ে যান।
চাঙ্কি বলেন, সেই সময় আমার খুব টাকার দরকার ছিল। ফলে বাংলাদেশের ছবির অফার গ্রহণ করেছিলাম। বিষয়টা আমার কাছে জুয়া খেলার মতো ছিল। কিন্তু সেখানে কাজ করে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলাম।
১৯৯৮ সালে ভাবনা পাণ্ডেকে বিয়ে করেন চাঙ্কি। স্ত্রী ভাবনাকেও বাংলাদেশে নিয়ে আসেন তিনি।
চাঙ্কি পাণ্ডে বলেন, প্রথম ছবিটাই এত সফল হয় যে, আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বাংলাদেশে টানা পাঁচ বছর চুটিয়ে কাজ করেছিলাম আমি। ১৯৯৮ সালে বিয়ে করি। আমাদের হানিমুন হয়েছিল বাংলাদেশেই। ভাবনা তারপরেই সন্তান সম্ভবা হয়। জন্ম হয় আমাদের একমাত্র কন্যা অনন্যার।
বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা পেয়েও একটা সময় সেখানেও কাজ কমতে থাকে চাঙ্কির। স্ত্রীর কথামতো মুম্বাই ফিরে যান তিনি এবং কাজ খুঁজতে থাকেন সেখানে। নায়ক থেকে পরে সাধারণ চরিত্রেও কাজ করতে শুরু করেন তিনি। যে কোনো চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান। বাবার এই গুণ প্রেরণা জুগিয়েছে অনন্যাকেও।
অনন্যাকে সর্বশেষ দেখা গেছে ‘সিটিআরএল’ সিনেমা ও ‘কল মি বে’ সিরিজে। আগামী বছরের জন্য তার সিনেমা ‘শঙ্করা’। গত ২ ডিসেম্বর দেওয়া ফিল্মফেয়ার ওটিটি পুরস্কারে ‘খো গায়া হাম কাহান’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সমালোচক শাখায় সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন অনন্যা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি