কখনোই পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করব না
সময়ের সবচেয়ে আলোচিত নায়িকা পরীমণি। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার ‘ভালোবাসা সীমাহীন’। ছবি মুক্তি পাওয়ার আগের ও পরের নানা বিষয় নিয়ে তার মুখোমুখি হয়েছিলেন নিউজবাংলাদেশের নিউজরুম এডিটর মনোজিৎ মিত্র। পরীর সঙ্গে সেই আলোচনার সবটুকুই থাকল পাঠকদের জন্য-
নিউজবাংলাদেশ: বড় পর্দায় নিজেকে দেখার পর কেমন লেগেছে?
পরীমণি: শুক্রবার মুক্তি পাওয়ার পর প্রথম শোতেই দেখেছি। আজও দেখলাম। পর্দায় তো প্রথমে নিজেকে দেখে বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে এটা আমি। প্রচণ্ড এক ঘোরলাগা নিয়ে পর্দার দিকে চেয়ে ছিলাম। তারপর সিনেমা শেষ করে কাঁদতে কাঁদতে হল থেকে বের হয়েছি, চোখের জল কোনোভাবেই ধরে রাখতে পারিনি।
নিউজবাংলাদেশ: ছবি মুক্তি পেল, হাতে এতগুলো ছবি, নতুন নতুন ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন, পুরো বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন?
পরীমণি: সত্যি বলতে কী এখনো মনে হয় স্বপ্ন দেখছি। এখনো স্বপ্নের মত মনে হয়, সত্যিই কী এতকিছু হয়েছে? এখনো নিজেকে নিজে বোঝানোর চেষ্টা করি, হ্যাঁ পরী এটা তুমিই, এটাই সত্যি। আর কাজের জায়গায় বারবার মনোযোগী হওয়ার চেষ্টা করি। নিজেকে বোঝাতে চেষ্টা করি হ্যাঁ, পরী, এটা তুমিই।
নিউজবাংলাদেশ: অতীতের সাধারণ মেয়ে থেকে হালের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা হয়ে ওঠা, নিজের এই পরিবর্তনকে কীভাবে দেখেন?
পরীমণি: আগে যেমন ছিলাম, এখনো তেমনই সাধারণ থাকতে চাই। মেকাপ নিয়ে যখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই তখন আমি ওই চরিত্রের, এর বাইরে আমি সাধারণ পরীই। খুবই সাধারণ হিসেবে নিজের কাছে বাঁচতে চাই। তবে এখন সময়ের সবচে অভাব বোধ করি। এর বাইরে জীবনে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।
নিউজবাংলাদেশ: এখন পর্যন্ত অভিনয় করা চরিত্রগুলোর মাঝে কোনটি সবচেয়ে মনে দাগ কেটেছে?
পরীমণি: রানাপ্লাজা আর মহুয়া সুন্দরী। রানাপ্লাজা ছবিতে অভিনয়ের পর অনেক অনেক রাত তো ঘুমাতেই পারিনি। মনে হত এক অন্ধকার ঘরে চাপা পড়ে আছি। ভীষণ ভয় লাগত আর সমস্ত কিছু ভেবে কষ্ট পেতাম। তারপর মহুয়া সুন্দরীতেও আমি অভিনয় করেছি যাত্রাপালার নায়িকা হিসেবে। তো যাত্রাপালায় মহুয়া চরিত্রে অভিনয় করতে করতে আমি নিজেকে মহুয়া ভাবতেই শুরু করি, আর যাত্রা দেখতে আসা এক যুবকও নিজেকে মহুয়ার প্রেমিক জমিদারবাবু ভাবতে শুরু করে। গতানুগতিক প্রেমের ছবির বাইরের এক ভিন্ন প্রেম আমাকে পুরো মহুয়ায় বানিয়ে দিয়েছিল!
নিউজবাংলাদেশ: ছবিতে আসার আগে মঞ্চে অভিনয় করেছেন?
পরীমণি: না, মঞ্চে অভিনয় করা হয়নি। ছবিতে আসার আগে ধারাবাহিক একটা নাটকে অভিনয় করেছিলাম, আর টুকটাক মডেলিং করতাম।
নিউজবাংলাদেশ: নায়িকা হতেই চেয়েছিলেন? নাকি অন্যকিছু?
পরীমণি: মারদাঙ্গা পুলিশ অফিসার হতে চেয়েছিলাম। ঠাসঠুস করে গুলি চালাব, সন্ত্রাসীদের ধরে আচ্ছামত পেটাব, তারপর সন্ত্রাসীদের পেছনে ছুটব। হুঙ্কার দেয়ার আগেই সবাই ভয় করবে, এইরকম আর কী।
নিউজবাংলাদেশ: পুলিশ অফিসার কেন?
পরীমণি: বাবাকে দেখেই পুলিশ অফিসার হতে চেয়েছিলাম। বাবা ছিলেন চুপচাপ পুলিশ অফিসার, সবার সঙ্গে কত ভদ্রভাবে কথা বলতেন, তারপর কাউকে ধমক দিতে পারতেন না। তাই বড় হয়ে তখন মারদাঙ্গা পুলিশ অফিসার হতে চেয়েছিলাম।
নিউজবাংলাদেশ: এখন পর্যন্ত কোনো পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করা হয়েছে?
পরীমণি: না। আর করতেও চাই না। এই স্বপ্নটাকে স্বপ্নই রাখতে চাই। কখনোই পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করব না। জীবনের এই স্বপ্নটাকে অভিনয়ে আনতে চাই না। এটা অপূর্ণ, অপূর্ণই থাক।
নিউজবাংলাদেশ: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
পরীমণি: আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
নিউজবাংলাদেশ.কম