News Bangladesh

সংস্কৃতি- বিনোদন ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবি হেলাল হাফিজের দাফন

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবি হেলাল হাফিজের দাফন

কবি হেলাল হাফিজ। ফাইল ফটো

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে বাংলা একাডেমিতে কবির প্রথম জানাজা ও জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা হয়। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কবির আত্মীয়-স্বজন ও ভক্ত-অনুরাগীসহ বিশিষ্টজনেরা। উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা হেলাল হাফিজের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, মাত্র অল্প কিছু কবিতা দিয়েই হেলাল হাফিজ বাংলাভাষার উল্লেখযোগ্য কবিদের মধ‍্যে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। তার অবদান জাতি সবসময় স্মরণ করবে।

শুক্রবার দুপুরে শাহবাগের সুপার হোম নামে একটি হোস্টেলে ওয়াশরুমে পড়ে মাথায় আঘাত পান হেলাল হাফিজ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও স্নায়ু রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

কয়েক দশক ধরে একাকী জীবন কাটিয়েছেন কখনও প্রেসক্লাবের সামনে কোনো হোটেলে, কখনও শাহবাগের সুপার হোমসে আবার কোনো না কোনো সুহৃদ-শুভাকাঙ্খীর বাসায়। তবে শরীর সুস্থ থাকলে তিনি দিনের বেশিরভাগ সময় কাটাতেন জাতীয় প্রেসক্লাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’কবিতাটি তাঁকে কবিখ্যাতি এনে দেয়। তার কবিতা হয়ে উঠেছিল মিছিলের স্লোগান।

‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’কালজয়ী কবিতার এ লাইন দুটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। পরবর্তীতে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলেন সময়ও কবিতাটি মানুষের মাঝে তুমুল সাড়া জাগায়।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ কবিকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এরপর বইটির ৩৩টির বেশি সংস্করণ বেরিয়েছে। দীর্ঘসময় নিজেকে অনেকটা আড়ালে সরিয়ে নিয়েছিলেন হেলাল হাফিজ। আড়াই দশক পর ২০১২ সালে তিনি পাঠকদের জন্য আনেন দ্বিতীয় বই ‘কবিতা ৭১’। তৃতীয় ও সর্বশেষ বই ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদোনা’প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালে।

কবি হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে। শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য কেটেছে সেখানেই। ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। উত্তাল ষাটের দশক হয়ে ওঠে তার কবিতার উপকরণ। তারপর দীর্ঘদিন তিনি কবিতা থেকে দূরে ছিলেন। এবার চিরতরে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিলেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়