News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:০৭, ৯ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ২০:২২, ১৭ জানুয়ারি ২০২০

ভয়াবহ সেশন জটের আশংকা

হরতালে স্থবির জাবির শিক্ষা কার্যক্রম

হরতালে স্থবির জাবির শিক্ষা কার্যক্রম

ঢাকা: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের একটানা হরতাল ও অবরোধের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পরও ২০ শতাংশেরও বেশি শিক্ষার্থীকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্লাস করতে হয়। কিন্তু হরতালের কারণে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে না পারায় বিভিন্ন বিভাগের ক্লাশ ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হলেও মার্চ নাগাদ এখন পর্যন্ত ১ম বর্ষের ক্লাশ শুরু করা সম্ভব হয়নি। ফলে ভয়াবহ সেশন জটের আশংকা দেখা দিয়েছে।

 

জানা যায়, আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পরও সকল শিক্ষার্থীর সিটের ব্যবস্থা করতে না পারা এবং গত ২৮ ডিসেম্বর হরতালে দুর্বৃত্তের ছোড়া পেট্রোল বোমা হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিমুল হক অয়ন অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার কথা ভেবে অনেকেই ক্লাশ করতে আসছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি বিভাগ বাদে বেশির ভাগ বিভাগে তিন মাস থেকে ১ বছরেরও বেশি সেশন জটে পড়েছে । দেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন এ পরিস্থিতির নেপথ্যের কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

৩ বছর আগেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সেশন জট ছিল না। চলমান অবরোধে ক্লাশ পরীক্ষা চললেও হরতালে প্রায় ৩৪টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউটের মধ্যে অর্ধেক বিভাগে নিয়মিত ক্লাশ-পরীক্ষা হচ্ছে না। যে সব শিক্ষক ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন তারা হরতালে ক্লাশ নেন আর যারা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন তারা ক্লাশ নিতে পারেন না। কারণ হরতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন বন্ধ থাকে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৩ সালের মাঝামঝি থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল ছিল ক্যাম্পাস। এসব কারণে ৬ মাস নিয়মিত ক্লাশ-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। এর পাশাপাশি মড়ার উপর খড়ার ঘা হিসেবে ছিল হরতাল। এই ক্ষতি এখন পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি।

২০১৩-১৪ সেশনের ভর্তি ’১৩ সালের নভেম্বরের পরিবর্তে ’১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভর্তি হওয়ার আগেই চার মাসের সেশন জটে পড়ে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এদিকে এখন পর্যন্ত অর্থনীতি ও বাংলা বিভাগ ব্যতীত কোনো বিভাগই ১ম বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা সমাপ্ত করতে পারেনি। এছাড়া ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইটি) ও বাংলা বিভাগ ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগই সময়মত স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি। চূড়ান্ত পরীক্ষার আয়োজন করতে পারেনি মার্কেটিং, আইআইটি, প্রাণরসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নসহ বেশিরভাগ বিভাগই। এতে বিশ্ববিদ্যারয়ে ভয়বহ সেশন জটের আশংকা করা হচ্ছে।

সেশন জট বিষয়ে আইআইটি’র পরিচালক ফজলুল করিম পাটোয়ারী নিউজবাংলাদেশকে বলেন, আইআইটি ইনস্টিউট বিশ্ববিদ্যালয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। শিক্ষকরা চাইলে হরতাল-অবরোধে ক্লাশ পরীক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশন জট মুক্ত করতে পারেন।

উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আইয়ুব আলী বলেন, হরতালেও অধিকাংশ বিভাগেই চূড়ান্ত পর্ব পরীক্ষা হচ্ছে। হরতাল খুব কড়াকড়ি না হলে হরতালের কারণে সেশন জটের সম্ভবনা কম থাকবে।

 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. ফারাজানা ইসলাম বলেন, বর্তমানের সেশন জট পূর্বের আন্দোলনের ফল। তবে আমাদের শিক্ষকরা সেশন জট কাটিয়ে উঠতে কাজ করে যাচ্ছেন। চলমান হরতালে কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাতে গোনা কয়েকটি বিভাগ ব্যতীত সবগুলো বিভাগেই হরতাল অবরোধে ক্লাশ-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

 

নিউজবাংলাদেশ.কম/এএএম/এফই

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়