News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ২৬ এপ্রিল ২০২০
আপডেট: ১৬:৫০, ১২ জুন ২০২০

যে শহরে জনসংখ্যা ৪

যে শহরে জনসংখ্যা ৪

কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড ল্যাব্রাডরের এক ছোট্টো শহর টিল্ট কোভ। সাকুল্যে দুই পরিবারের বাস। শহরের জনসংখ্যা ৪। স্বামী-স্ত্রী ডন এবং মার্গারেট
কানাডার সবচেয়ে ছোটো শহর হলে কী হবে, নিজস্ব ডাক পরিষেবার ব্যবস্থা রয়েছে টিল্ট কোভে। রাতের শহরকে আলোকিত করে রাখতে রয়েছে গোটা দুই স্ট্রিট লাইট। শহরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, পানীয় জলের পরিষেবা পাওয়া, আবর্জনা সংগ্রহ, এই সব কাজের জন্য সরকারকে নিয়মিত কর দিয়ে থাকেন কলিন্স দম্পতি এবং তাদের প্রতিবেশী পরিবার।
ইতিহাস বলছে, এই টিল্ট কোভেই নাকি এক সময়ে দু’হাজার মানুষ থাকতেন। দেড় শতক ধরে একটু একটু করে একলা হয়েছে তা। ১৮৬৪ সালে এখানে তৈরি হয় বিশাল এক তামার খনি। খনির কাজে যুক্ত থাকা কত কত মানুষ এসে ভিড় করেছিল কানাডার এই শহরে। পরবর্তী আধ শতক এভাবেই কেটেছিল সুখের দিন। ১৯১২-র এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ (তুষারঝড়) পালটে দিল সব কিছু। খনি বন্ধ হলে কাজের খোঁজে এক এক করে প্রায় সবাই পাড়ি দিল অন্য শহরে।
বছর পাঁচেক আগে টিল্ট কোভের জনসংখ্যা ছিল ৭। ডন আর মার্গারেট তাদের দু’জনের মাকেই হারিয়েছেন বিগত কয়েক বছরে। আর এক বয়স্ক নাগরিক চলে গিয়েছেন ১২ কিলোমিটার দূরের অন্য এক শহরে। এখন যারা আছেন, ৪ জনের বয়সই পঞ্চাশের ঘরে। ওহ! খুদে সদস্যের কথা তো বলাই হয়নি। যদিও তার সারা বছরটা এই রূপকথার রাজ্যে কাটে না। শুধু স্কুলের ছুটিগুলোয় এসে মাস কয়েক কাটিয়ে দাদাদাদী সঙ্গে। কলিন্স দম্পতির নাতির কিন্তু ভারী মজাতেই কাটে সে ক’টা দিন। যখন ইচ্ছে নৌকো নিয়ে বেরিয়ে পড়া, ইচ্ছে মতো জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো।
দ্বিতীয় পরিবারটি? আরে, তারা যে মার্গারেটের ভাই আর ডনের বোন। এই দম্পতি থাকেন পাশের বাড়িতেই। সিনেমাহল, পানশালা এককালে থাকলেও এখন তো সে সব নেই। নেই ইন্টারনেট কানেকশনও। তা হলে বিনোদনের রাস্তা? মুখোমুখি বসে আড্ডা হয়, গান হয়, গপ্প হয়, আর কী চাই? এ ছাড়া আছে ডনের বানানো এক সংগ্রহশালা। মার্গারেটের ৪০ বছরের জন্মদিনে টিল্ট কোভের ইতিহাসসমৃদ্ধ এই মিউজিয়ামটি ডন উপহার দিয়েছিলেন তার স্ত্রীকে। নাম রেখেছেন, ‘দ্য ওয়ে উই ওয়্যার’ (আমরা যেমন ছিলাম)।
শীতকাল ছাড়া বাকি সময়ে পর্যটকদের বেশ ভালোই ভিড় হয় সেখানে। সব মিলিয়ে ছোট্টো শহরের শান্ত ছিমছাম জীবন নিয়ে খুশি দু’টো পরিবারই। বয়স বাড়লে সাধের টিল্ট কোভ ছেড়ে এক দিন চলে যেতে হতে পারে, এই ভাবনাটাই বিষণ্ণ করে তোলে ওদের মন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়