লিমনের পঙ্গুত্বের ৪ বছর আজ
ঢাকা: ৪ বছর আগে, অর্থাৎ ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে র্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আহত হন লিমন হোসেন। জীবন বাঁচাতে চিকিৎসকরা তার এক পা কেটে বাদ দিতে বাধ্য হন। এরপর থেকেই পঙ্গুত্ব মেনে নিয়ে বিচারের অপেক্ষায় দিন গুনছেন লিমন।
সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিমন হোসেন নামের ওই আইডি থেকে দেয়া একটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “আজ ২৩ মার্চ, এ দিন র্যাব আমার পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে... আজও এই চরম নিষ্ঠুরতার বিচার পাইনি... আমার জন্য দোয়া করবেন।”
সাতুরিয়া গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে লিমন বর্তমানে লিমন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী।
উল্লেখ, গরু আনতে যাবার পথে স্থানীয় শহীদ জমাদ্দারের বাড়ির সামনে র্যাব-৮-এর একটি দল তাকে সামনে পেয়ে শার্টের কলার ধরে নাম জিজ্ঞেস করে। লিমন নিজেকে ছাত্র বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু র্যাবের এক সদস্য কথাবার্তা ছাড়াই তার বাঁ পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে দেন। লিমন সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।
ওই ঘটনার পর লিমনকে সন্ত্রাসী হিসাবে উল্লেখ করে অস্ত্র আইনে এবং সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে দুটি মামলা করে র্যাব। তবে ঘটনাটি গণমাধ্যমে এলে দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো র্যাবের সমালোচনা করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানায়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও লিমনের পক্ষে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়।
এই পরিস্থিতিতে ২০১৩ সালের ৯ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় র্যাবের দায়ের করা মামলা দুটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। গত ১৬ অক্টোবর সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে সব অভিযোগ থেকে মুক্ত হন লিমন।
অন্যদিকে ছেলেকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ছয় র্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম। বর্তমানে ওই মামলা ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনএইচ/এমএম
নিউজবাংলাদেশ.কম