দুর্বৃত্তের আগুন থেকে গাছও রক্ষা পাচ্ছে না!
রাজশাহী: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী-ফরাদপুর এলাকায় পদ্মার চরে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় সরকারিভাবে গড়ে তোলা বনে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে।
এতে ৯০ হেক্টর বনের মধ্যে ৪ হেক্টরের বেশি জায়গা জুড়ে প্রায় ১০ হাজার গাছ পুড়ে গেছে।
রোববার রাতে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে এ সমস্ত গাছ পুড়ে যায় বলে বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা বন কর্মকর্তা মঈন উদ্দীন জানান, “রাতে বনের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বনের ভেতর খড় ও শুকনো পাতা পড়ে থাকায় আগুন মুহুর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে। পাশের গ্রামবাসী আগুন দেখতে পেয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে চরের যে অংশে বন অবস্থিত, সেই অংশে পানির কোনো উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে অনেক সময় লেগে যায়। স্থানীয় লোকজন পানি না পেয়ে ইঁদুরের গর্তের মাটি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুনে বনের আকাশমনি, শিশু, খয়ের, ঝাউ, চাম কড়ই, ফুল কড়ই, বাবলা ও নিমসহ বিভিন্ন প্রজাতির ১০ হাজার গাছ পুড়ে গেছে।”
বনে নিযুক্ত সরকারি পাহারাদার ওসমান গণি ও জিল্লুর রহমান জানান, “আগুন লাগার সময় তারা দুজন বনের দুদিকে পাহারা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ বনের ভেতর থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে তারা গ্রামবাসীকে সংবাদ দেন। এর আগেও দুর্বৃত্তরা বনটিতে দুদফায় আগুন দেয়।”
বন কর্মকর্তা মঈন উদ্দীন জানান, “আগুনের সংবাদ পেয়ে তিনি দমকল বিভাগকে সংবাদ দিয়েছিলেন। কিন্তু পদ্মা নদীর হাঁটু পানি ও বালুচর পেরিয়ে তারা পানি ভর্তি গাড়ি নিয়ে আগুনের কাছে যেতে পারেননি। বনের ভেতর কিংবা আশপাশে পানিরও কোনো উৎস নেই। তাই আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়ে দমকল বাহিনী ফিরে যায়।”
তিনি আরও জানান, “আগুনে পুড়ে যাওয়া বনের অংশে এখনও অনেক গাছ বেঁচে আছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হলে বেশ কিছু গাছ বাঁচানো সম্ভব হবে। প্রকৃতির ওপর ভরসা করা ছাড়া উপায় নেই।”
চরাঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্পের আওতায় ২০১১-১২ ও ১২-১৩ এ দুই অর্থ বছরে এক কোটি পাঁচ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রেমতলী-ফরাদপুর এলাকায় পদ্মার চরে ৯০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতিরে এক লাখ ৩২ হাজার গাছ লাগিয়ে বনটি গড়ে তোলে বন বিভাগ।
সামাজিক এই বনায়নে উপকারভোগী এলাকার পাঁচশ ৪৯ জন ব্যক্তি।
এ ঘটনায় গোদাগাড়ী থানায় মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে। এছাড়া বন বিভাগের একটি নিজস্ব তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও উপজেলা বন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম