নাশকতায় ব্যবহৃত হচ্ছে স্কুল-শিশুরা!
রাজশাহী ব্যুরো
রাজশাহীতে নাশকতায় ব্যবহার করা হচ্ছে স্কুলের ছোট ছোট শিশুদের। শনিবার দিবাগত রাতে রাজশাহীর পুঠিয়ায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের সময় হাতে-নাতে জনতার হাতে আটক হয় তিন শিশু। পরে তারা পুলিশের কাছে ‘নেতা বানানোসহ টাকা-পয়সা ও আগ্নেয়াস্ত্র’ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে পেট্রোল বোমা তুলে দেওয়ার আদ্যোপান্ত কাহিনি বর্ণনা করে।
আটক ওই তিন শিশু হলো, পুঠিয়ার ঝলমলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র এবং ঝলমলিয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে জুবায়ের রহমান জয় (১৪), নাটোরের কাফুরিয়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সোহানুর রহমান সোহান (১৪) এবং কাফুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ও মুনসুর রহমানের ছেলে সিজার রহমান (১৩)।
আটককৃতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুঠিয়া থানার এসআই আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, জুবায়েরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সোহান। সোহানের পূর্ব পরিচিত নাটোরের কাফুরিয়া এলাকার তুহিন। তুহিন ছাত্রদল কর্মী। তুহিন এবারের এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে কাফুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। বুধবার রাতে পুঠিয়ার গাঁওপাড়া এলাকায় একটি ইসলামি জলশায় তুহিন এলে সেখানে জয়ের সঙ্গে তুহিনের পরিচয় করিয়ে দেয় সোহান। এ সময় তারা শনিবার রাতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনা করে । পরিকল্পনামত তাদের আশ্বাস দেয়া হয়, সফল হলে বড় ধরণের পার্টি দেয়া হবে। তাদের বড় নেতা বানানো হবে। বিড়ি-সিগারেট খাওয়ার টাকা দেওয়া হবে।
পুঠিয়া থানার এসআই আসাদ আরো জানান, পূর্ব পরিকল্পনা মতো শনিবার সন্ধ্যায় কাফুরিয়া যায় সোহান ও জুবায়ের। সেখানে তুহিনের সঙ্গে আগে থেকেই ছিলো তার প্রতিবেশী সিজার ও অজ্ঞাত একজন। সন্ধ্যায় তারা কাফুরিয়া থেকে পাঁচটি পেট্রোল বোমা নিয়ে পুঠিয়ার গাওপাড়া ঢালান ও গাওপাড়া বাজারের মাঝামাঝি নির্জন স্থানে অবস্থান নেয়। এসময় তারা ট্রাক লক্ষ করে তিনটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে । তিনটাই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। একটি ট্রাকে আগুন ধরে ধরেও নিভে যায়। ওই সময় একটি পেট্রোল বোমা ঘটনাস্থলেই জয়ের হাত থেকে পড়ে ভেঙে যায়। পাঁচ নম্বর পেট্রোল বোমাটি নিক্ষেপ করে তুহিন। বিকট শব্দে সেটা বিস্ফোরণ হলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। এসময় তুহিন ও অজ্ঞাত আরেক শিশু দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। ভয়ে আর আতঙ্কে সেখানেই নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকে জয়, সিজার ও সোহান। স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তাদের আটক করে। পরে ঘটনাস্থলেই সবার সামনে তারা পুলিশের কাছে পুরো ঘটনা বর্ণনা করে।
এসআই আসাদ জানান, এ ঘটনায় পুঠিয়া থানার এএসআই নাজির বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় জয়, সোহান, সিজার, তুহিন ও অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ পেট্রোল বোমার আলামত জব্দ করেছে। তিনি জানান, তুহিনকে আটকের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের কিশোর অপরাধী হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/ কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম