নদী মরে খাল, এখন চাষাবাদ
সিরাজগঞ্জ: জেলার সলঙ্গা থানার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত গারুদহ, ফুলজোর ও স্বরস্বতী নদী এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। সলঙ্গার মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া নদী তিনটিতে খরার সময় কোনো পানি থাকে না। পানি শুকিয়ে যাওয়া এই নদীগুলো মরা খালে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রতিবছরেই নব্যতা হারিয়ে এর প্রবাহ প্রায় শূন্যের কোঠায়।
আবহমান কালের উত্তাল নদী সলঙ্গা থানা সদরের গারুদহ, নলকা ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া ফুলজোর ও হাটিকুমরুল ইউনিয়নের স্বরস্বতী নদী আজ স্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে। ভয়াবহ নাব্যতা সঙ্কট গারুদহ, ফুলজোর ও স্বরস্বতী নদীকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এসব নদীর অববাহিকায় পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি আবাদে নেমে এসেছে ভয়াবহ স্থবিরতা।
নদী যেন আর নদী নেই। নদী যেন এখন নিচু শ্রেণির ফসলি জমি। নদীর তলায় সফলভাবে চাষাবাদ করা হয়েছে বোরো ধানের আবাদ। পথচারীরা নদীর তলায় ধান দেখে অবাক হয়ে থমকে দাঁড়ায়। এত সুন্দর ধান হয়েছে নদীর তলায়। দেখলে মনে হবে নদী আর ফসলের মাঠ যেন একাকার হয়ে গেছে।
এমনি অবস্থা দেখা দিয়েছে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা সদরসহ আশপাশের উপর দিয়ে প্রবাহিত গারুদহ, ফুলজোর ও স্বরস্বতী নদীতে। নদীতে ধান চাষ দেখে কেউ আনন্দিত কেউ আতঙ্কিত। কারণ নদী তো দেশের প্রাণ। তাছাড়া নদ-নদী খাল-বিল স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের অংশ বিশেষ। আর এই নদীতে ধান চাষাবাদ হচ্ছে এ যেন আগামী প্রজন্মে প্রাকৃতিক পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কার পূর্বাভাস। এককালে গারুদহ, ফুলজোর ও স্বরস্বতী নদীগুলো ছিল যৌবন জোয়ারে পরিপূর্ণ।
গারুদহ, ফুলজোর ও স্বরস্বতী নদীর দু’ধারে গম, সরিষা, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমরা, পটল, বেগুনসহ নানা প্রকার ফসল সাফল্যের সঙ্গে চাষাবাদ করে উৎপাদন করেছেন কৃষকরা। বর্তমানে নদীর তলায় বোরো ধান চাষাবাদ করছেন তারা। গারুদহ, ফুলজোর ও স্বরস্বতী নদীর বিভিন্ন স্থানে ধান চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে বালুভরা এলাকায় প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ধান চাষ করা হয়েছে।
সলঙ্গা দিয়ারপাড়া গোজা গ্রামের কৃষক সোলাইমান, নলকা গ্রামের আকবার হোসেন, এরান্দহ গ্রামের আব্দুল হালিম, ইয়াসিন আলী, মোকসেদ আলী, হাটিকুমরুল নবরত্নপাড়া গ্রামের সোলাইমান আলী, জুরান আলী জানান, নদীর তলায় এবার তাদের ধান সুন্দর হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে তারা নদীর তলায় সাফল্যের সঙ্গে ধান চাষাবাদ করছেন।
নিউজবাংলাদেশ/এফএ
নিউজবাংলাদেশ.কম