সাবধান, সুন্দরী নারী’র ফ্রেন্ড-রিকোয়েস্টের নেপথ্যে শিবির
ঢাকা: প্রথমে ফেসবুকে সুন্দরী ও আকর্ষণীয় নারীদের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া আইডি খোলা হয়। তারপর মন্ত্রী, এমপি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ সাধারণের কাছেও পাঠানো হয় বন্ধু হওয়ার আবেদন (ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট)। সবশেষে ওই সব ভুয়া প্রফাইল থেকে শিবিরের বিভিন্ন পেইজ ও ব্লগের পোস্ট শেয়ার করা হয়।
বাঁশের কেল্লার ফেসবুক পেজের অ্যাডমিন ও শিবির নেতা জিয়াউদ্দিন ফাহাদকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পেয়েছে গোন্দোরা। গত ১২ মার্চ বিকেলে কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে গত শনিবার (১৪ই মার্চ) আদালতে অনুমতিক্রমে ফাহাদকে আট দিনের রিমান্ড নেয় ডিবি। আজ (২১ মার্চ) ছিলো রিমান্ডের শেষ দিন।
এদিকে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, শতাধিক ব্লগ ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে দেশব্যাপী প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর জন্যই জামায়াত সুন্দরী নারীদের ছবি দিয়ে ফেসবুক পেজ খুলে প্রতারনার এ কাজ শুরু করে। এমন প্রচারণার জন্য এখন পর্যন্ত ইসলামী ছাত্র শিবিরের অন্তত ৫০জন সক্রীয় কর্মীকে বিদেশ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে আনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ফাহাদ। তাছাড়া প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিবিরের এসব কর্মীরা প্রত্যেকে বেশ কয়েকটি ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ও ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে একাধিক ফেসবুক পেজ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এসব পেজ দিয়ে তারা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোসহ সরকারবিরোধী নানা রকম জঙ্গি হামলার উস্কানি দিয়ে থাকে। তাছাড়া সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির মধ্যমে দেশে একটা অরাজকতা সৃষ্টিই ছিলো তাদের মূল লক্ষ্য।
ফাহাদের প্রসঙ্গে জানতে ডিবির ডিসি মনিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ফাহাদের ফেসবুক স্ট্যাটাস পর্যালোচনা করে বেশ কয়েকটি প্রোফাইল শনাক্ত করা হয়েছে যেগুলো থেকে সন্ত্রাসী হামলায় ইন্ধন যোগানো হয়। গোয়েন্দারা এ মুহূর্তে ওইসব আইডির মালিক এবং উস্কানিদাতাদের অবস্থান খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “২০১০ সালে প্রথমে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। ওই সময়ে জেনেছিলাম, ৩০ জন ছাত্রশিবির কর্মী বিদেশ থেকে প্রযুক্তির ওপর আধুনিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। শিবিরের একটি বড় অংশ এ মুহূর্তে সাইবার অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমরা তাদের একটি তালিকা তৈরি করছি এবং শিগগিরই তাদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করবো।”
এদিকে, ২২ ফ্রেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের বাঁশখালী পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের সন্ধ্যান পায় র্যাব। ওই এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার ছমিউদ্দিন। তিনি গ্রেফতার হওয়া জিয়াউদ্দিন ফাহাদের বাবা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, ছমিউদ্দিনের ছত্রছায়ায় পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প তৈরি করেছিলেন ফাহাদ। তার বাবা ছমিউদ্দিনকে গত ৮ মার্চ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে র্যাব।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় দিতে শুরু করার পর থেকেই ছাত্র শিবিরের অনলাইন তৎপরতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায়। ওইসব সাইটে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী এবং সন্ত্রাসের উস্কানি দিয়ে অনেক পোস্ট দেওয়া হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/একে
নিউজবাংলাদেশ.কম