ফসলি জমি রক্ষা
গ্রামবাসীর নিজ উদ্যোগে খাল খনন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর এবং শাহজাদাপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমি সেচবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন। খাল খনন না হওয়ায় সৃস্টি হয়েছে পানি শূন্যতা। ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ।
জনপ্রতিনিধি, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ বিভিন্ন স্থানে খাল খননের দাবিতে ধরনা দিয়ে কোনো ফল না হওয়ায় ফসলি জমি বাঁচাতে অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার হাজার হাজার গ্রামবাসী নিজেরাই শাহবাজপুর কুচনি-বুড্ডা খাল খননের উদ্যোগ নিয়েছে।
শুক্রবার থেকে দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক স্বেচ্ছায় খাল খননের কাজ শুরু করেছে।
গ্রামবাসী জানায়, সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর থেকে শাহজাদাপুর পর্যন্ত ছয়কিলোমিটার দীর্ঘ কুচনি খালটিতে এক সময় শুষ্ক মৌসুমে আশুগঞ্জ পলাশ অ্যাগ্রোইরিগেশন সেচ প্রকল্পের পানি সরবরাহ করা হত। গত এক দশকে খালটির তলদেশ পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে শুষ্ক মৌসুমে সেচ প্রকল্পের পানি আর আসছে না। ফলে পানির অভাবে কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে ঠিক সময়ে সেচ দেয়া যাচ্ছে না।
জানা যায়, এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষকরা সরাইল উপজেলার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে একাধিক বার ধরনা দিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তাই গ্রামবাসী সম্মিলিতভাবে জমি বাঁচানো ও চাষাবাদের জন্যে স্বেচ্ছাশ্রমে গত শুক্রবার সকালে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর এবং শাহজাদাপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ স্বেচ্ছায় খাল খননের কাজ শুরু করে।
সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সত্যেন্দ্র মোহন দাস এবং এক নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মো. আব্দুল হক বলেন, “সরাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. এমরান হোসেন সহ সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার গ্রামবাসিকে নিয়ে আমরা জমিতে সেচের পানির বিষয়ে আকুল আবেদন জানিয়েছি। বিভিন্ন সময় আমাদের এই জমি বাঁচানোর জন্য তাদের কাছে দাবি করেছি, কোনো লাভ হয়নি। গ্রামবাসীর দাবি পূরণের জন্য কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই গ্রামবাসী মিলে বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছায় খাল খননে নেমেছি।”
কৃষকদের দাবির সাথে একমত পোষণ করে আশুগঞ্জ-পলাশ অ্যাগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান জানান, প্রতিবছর তিতাস নদী থেকে কৃষকরা পানি নিয়ে সেচকাজ পরিচালনা করত। কিন্তু এ বছর পানি না আসায় সেচ কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই অবস্থায় গ্রামবাসীর দাবি ছয়কিলোমিটার দীর্ঘ কুচনি-বুড্ডা খালটি খননের পাশপাশি আশুগঞ্জ-পলাশ অ্যাগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের পানি সরবরাহ করা হলে অন্তত পাঁচহাজার কৃষক পরিবার উপকৃত হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম