কক্সবাজার দাড়িয়ারদীঘিতে বনভূমি দখলের হিড়িক
ছবি: নিউজবাংলাদেশ
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন রাজারকুল রেঞ্জের দাড়িয়ারদীঘি বন বিটে নির্বিচারে বনভূমি দখল, বিক্রি, পাহাড় কেটে অবৈধ বসতি নির্মাণ, বনের গাছ পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে। খোদ বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেনের সাথে বনভূমি অবৈধ দখলদাররা যোগসাজশে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
দাড়িয়ারদীঘি বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় বেপরোয়া গতিতে পাহাড় কাটা, বন উজাড়, বনভূমি অবৈধ দখল, সামাজিক বনায়নের প্লট দেয়ার নামে টাকা আদায়, অবৈধ করাতকল স্থাপন সহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন যোগদানের পর তার সাথে বিশেষ সখ্যতা গড়ে উঠে শীর্ষ পাহাড়খেকোদের সাথে। নতুন করে আর কোন মামলা না হওয়ার বিশেষ গোপন চুক্তিতে পাহাড় কাটার ‘লাইন’ দেন বনভূমি অবৈধ দখলদার সিন্ডিকেটকে।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারি বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও বনায়ন রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন রক্ষক না হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে। রাজারকুল রেঞ্জের দাড়িয়ালদীঘির অধিকাংশ বনভূমি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের দখলে চলে গেছে। এদের নেতৃত্বে বনভূমি দখল ও বিক্রি হয়েছে। এ বিটের বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে শত শত পানেরবরজ, পাশাপাশি গড়ে উঠেছে পরিবেশ বিধ্বস্ত ব্যক্তিগত গরু, ছাগল ও মুরগীর খামার, দালানবাড়িসহ হাজার হাজার অবৈধ স্থাপনা। এসব দখলদারিত্বের বিপরীতে সুবিধা নিচ্ছে বিট এ কর্মকর্তা।
রাজারকুল রেঞ্জের দাড়িয়ারদীঘি বিটের টোংগা ডেবা, কালুর দোকান এলাকায় একাধিক পাহাড় কাটা হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ।
এছাড়া বাদিতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ আকারে পাহাড় কাটা হয়। শুধু পাহাড় কাটায় নয়, পুরো বিট জুড়ে বনভূমি দখল, বিক্রি, অবৈধ বসতি তৈরি, গাছ পাচার, বন উজাড়সহ বনজ সম্পদের উপর ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ নেমে এসেছে। যা অতীতে দেখা যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দাড়িয়ারদীঘি বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন মিথ্যা তথ্য দিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করেন। এছাড়া পাহাড় কাটা, গাছ কাটা, জবরদখল সহ নানা অপরাধে মামলা না করে একদিকে অপরাধ ধামাচাপা দেন, অপরদিকে অপরাধীদের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ আদায় করেন। এভাবে তিনি তার বিটের অপরাধের পরিসংখ্যান কম দেখান। অথচ বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন, যা সরেজমিন তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হওয়ার পর থেকে তিনি পাহাড় কাটার স্থানে গাছ রোপন, নতুন বসতিকে পুরাতন বানানোর কৌশল তৈরী সহ বিভিন্ন ভাবে অপরাধের আলামত নষ্টের চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে দাড়িয়ারদীঘি বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন বলেন, সব অপরাধের বিরুদ্ধে মামলা ও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এসব অপরাধে জড়িত নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি