কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা!
ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনেস্থা করার অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে চৌদ্দগ্রামের নিজ এলাকা কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে, স্থানীয় লোকজনের হাতে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দুপুরের এই ঘটনার পর রাতে জুতার মালা ও এলাকা ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়ার ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ইউনিয়নের লুদিয়ারা এলাকার বাসিন্দা এবং কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। হেনস্তাকারীরা সবাই একই এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের সাথে বিরোধে জড়িয়ে তার বিরুদ্ধে আগে একাধিক মামলা দেওয়া হয়। রবিবার দুপুরে তাকে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি হেনস্তা করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধা কানু গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে এলাকায় থাকার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ সময় তিনি জুতার মালা সরিয়ে দিয়ে জানান, “আমি আর এখানে আসব না।”
মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি কখনোই তাদের ক্ষতি করিনি, বরং আওয়ামী লীগের এমপির রোষানলে পড়ে ৮ বছর এলাকা ছাড়া ছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিচার তো কোথায় পাব? তারা জামায়াতের রাজনীতি করে, আর আমি আওয়ামী লীগ করি।’’
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু সাংবাদিকদের বলেন, হঠাৎ আমাকে একা পেয়ে জোর করে ওরা জুতার মালা গালায় দিয়ে ভিডিও করেন। বিচার কার কাছে চাইব? মামলা দিয়ে আর কী হবে? তারা সবাই জামায়াতের রাজনীতি করে। আমি আওয়ামী লীগ করলেও বিগত দিনে তাদের কোনও ক্ষতি করিনি। উল্টো আওয়ামী লীগের এমপির রোষানলে পড়ে ৮ বছর এলাকা ছাড়া ছিলাম।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার পর ওই মুক্তিযোদ্ধা মোবাইল ফোনে বিষয়টি আমাকে অবগত করেছিলেন। এ বিষয়ে তিনি অভিযোগ করবেন না বলেও জানান। তবে রাতে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার আবারও তাকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দেবেন কি না বিষয়টি এখনও নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি