News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৪ জুন ২০২০
আপডেট: ১০:২২, ১৮ জুন ২০২০

যশোর-খুলনা মহাসড়ক উন্নয়ন

কাজ শেষ না হতেই ফুলে উঠেছে সড়ক

কাজ শেষ না হতেই ফুলে উঠেছে সড়ক

যশোর-খুলনা মহাসড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু করা হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। ২০২০ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। প্রকল্পের কাজ শেষ না হলেও এরই মধ্যে আট কিলোমিটার সড়ক ফুলে উঠেছে। এতে যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে।
অভিযোগ রয়েছে, নিম্নমানের কাজ করার কারণে এমনটি হয়েছে। যদিও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ যশোরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ রফিকুন নবী দাবি করেছেন, তীব্র তাপ ও গাড়ির ওভারলোডের কারণে সড়ক আঁকাবাঁকা হয়ে ফুলে-ফেঁপে উঠছে। কী কারণে এটি হচ্ছে, সেজন্য পরামর্শক নিয়োগ করবেন তারা।
সওজ সূত্র জানায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার উন্নয়নে ৩২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। যশোর-খুলনা মহাসড়কটি যশোর শহরতলির পালবাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার রাজঘাট পর্যন্ত নতুন করে নির্মিত হচ্ছে। ২৭ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং তমা কনস্ট্রাশন অ্যান্ড কোং। এর মধ্যে আট কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে উঁচু-নিচু ঢেউ। রাস্তা ফুলে-ফেঁপে ওঠায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
সড়কটি বর্তমানে ২৪ ফুট চওড়া রয়েছে। এটি আরো ১০ ফুট বাড়িয়ে ৩৪ ফুট চওড়া ও দুই লেন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সড়কের নতুন করে ভিত তৈরি করে সাড়ে চার ফুট থেকে পাঁচ ফুট গর্ত করে প্রথমে বালি ফিলিং, পরে বালি ও খোয়া এবং শেষে বালি ও পাথর মিশিয়ে ভরাট করার নিয়ম রয়েছে। এরপর বিটুমিন সারফেজ পাঁচ ইঞ্চি দিয়ে কাজ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে।
সড়ক দুটির কাজের শুরুতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সড়ক উন্নয়নের এ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের কোনো নিয়মনীতি মানেনি। তারা গোঁজামিল দিয়ে ইচ্ছামতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ঠিকাদাররা সড়কের পুরনো ব্রিটিশ আমলের লোনা ধরা ইট ও খোয়া তুলে সেটাই আবার ভেঙে গর্তে ব্যবহার করেছেন, যা দরপত্রে বলা হয়নি। এছাড়া সড়কটি পাঁচ ফুট গর্ত করে ভিত তৈরির নির্দেশনা থাকলেও সেই নিয়মও মানেনি। সড়কে নতুন ইট, বালি, খোয়া ব্যবহার না করে খুঁড়ে ওঠানো মালামালই ফের ভরাট করা হয়েছে।
যশোর-খুলনা সড়কের বসুন্দয়ার বাসিন্দা আবদুল জব্বার জানান, নিয়ম মেনে সড়ক নির্মাণ করা না হলে সেটি বেশিদিন স্থায়ী হবে না। সড়ক নির্মাণের শুরুতে অনিয়ম হলেও কর্তৃপক্ষের জোরালো ভূমিকা আমরা দেখছি না। আমাদের এলাকার সড়কেও তৈরি হয়েছে আঁকাবাঁকা ঢেউ।
যশোর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম চাকলাদার বলেন, “আমি সম্প্রতি খুলনায় গিয়েছিলাম। নতুন নির্মিত সড়কে এমন ফুলে-ফেঁপে ওঠা কখনো দেখিনি। সওজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের কাজে অনিয়ম করার কারণে এমনটি হয়েছে। এতে আমাদের গাড়ির ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।”
এ ব্যাপারে যশোর সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “শিল্প শহর নওয়াপাড়া থেকে ওভারলোড গাড়ি চলাচল করায় এবং তীব্র তাপের কারণে সড়কে এমনটি হতে পারে। আমাদের দেশে যে বিটুমিন ব্যবহার করা হয় তা নিম্নমানের। তার পরও আমরা পরামর্শক নিয়োগ করছি। যেসব জায়গায় সড়কে সমস্যা হয়েছে, সেসব রাস্তা আবারো নির্মাণ করা হবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঠিকাদারের কাজে অনিয়মের সুযোগ নেই। সড়কের কাজ শুরুর সঙ্গেই এসও এবং এসডিও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারাই সড়ক দুটির সব কাজের দেখভাল করছেন। তার পরও কাজে অনিয়ম পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়