করোনায় আক্রান্ত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গত রোববার তার শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। পরে ফলাফলে করোনা পজেটিভ আসে। তার পরীক্ষা হয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত করোনা কিটে।
সোমবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সূত্রে এ তথ্য মিলেছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রোববার বিকেল পাঁচটায় তিনি গণস্বাস্থ্য নগর কেন্দ্রে করোনা টেস্ট করেন। তাতে জানতে পারেন তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বাসায় আইসোলেশনে আছেন।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গতকাল রোববার আমার থুথু পজিটিভ হয়েছে। তিনদিন হলে অ্যান্টিবডি পজিটিভ হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার অ্যান্টিবডি পজিটিভ হবে।’
খ্যাতিমান চিকিৎসক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামক স্বাস্থ্য বিষয়ক এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮২ সালে প্রবর্তিত বাংলাদেশের ‘জাতীয় ঔষধ নীতি’ ঘোষণার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে জন্ম নেয়া জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বাবার শিক্ষক ছিলেন বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন। দশ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ঢাকার বকশীবাজারের নবকুমার স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট উত্তীর্ণের পর তিনি ১৯৬৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। এরপর ১৯৬৭ সালে ব্রিটেনের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
পরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এফআরসিএসের চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করে লন্ডন থেকে ভারতে ফিরে এসে যুদ্ধে অংশ নেন। আগরতলার মেলাঘরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন এবং এরপরে ডা. এম এ মবিনের সাথে মিলে সেখানেই ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন। তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক নারীকে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিতেন এবং তাদের দিয়ে রোগীদের সেবা করতেন। তার এই অভূতপূর্ব সেবাপদ্ধতি পরে বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল পেপার 'ল্যানসেট'-এ প্রকাশিত হয়।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এছাড়াও ফিলিপাইন থেকে রেমন ম্যাগসাইসাই (১৯৮৫) এবং সুইডেন থেকে বিকল্প নোবেল হিসাবে পরিচিত রাইট লাভলিহুড (১৯৯২), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো’ (২০০২) এবং মানবতার সেবার জন্য কানাডা থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেএইচ