News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০২:৫২, ২৪ মে ২০২০
আপডেট: ০২:৫৩, ২৪ মে ২০২০

জীবিতকে মৃত দেখিয়ে চালের তালিকা থেকে নাম কাটলেন ইউপি সদস্য

জীবিতকে মৃত দেখিয়ে চালের তালিকা থেকে নাম কাটলেন ইউপি সদস্য

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় থাকা সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র নারী আতরজান খাতুনকে (৯০) মৃত দেখিয়ে তালিকায় স্বজনের নাম প্রতিস্থাপন করে চাল উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মুক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে জীবিত ওই নারীকে মৃত দেখিয়ে অন্যজনের নাম তালিকাভুক্ত করায় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে দৌলতপুর ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকা তৈরি করা হয়। উক্ত তালিকা অনুযায়ী বছরে ৫ বার ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল ১৯৩ পরিবারের মধ্যে দেওয়া হয়। সেই তালিকায় ওই ইউনিয়নের দৌলতখালী গ্রামের স্বামী-সন্তানহারা অসহায় বৃদ্ধা আতরজানের নাম ১০১ নম্বর কার্ডধারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আতরজান ওই গ্রামের মৃত ইসারতের স্ত্রী। ওই কার্ড অনুযায়ী তাকে নিয়মিত চাল দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ করে চলতি মে মাসে অন্তর্ভুক্ত নতুন সুবিধাভোগীদের নামের তালিকায় আতরজানকে মৃত দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুক্তার হোসেনের স্বজন আয়তালের ছেলে আমিরুলের নাম প্রতিস্থাপন করে তাকে চাল দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের চাউলের ডিলার মোজাম্মেল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দীর্ঘ সাড়ে ৩ বছর নিয়মিত চাল পেলেও হঠাৎ করে মে মাসে আতরজানকে মৃত দেখিয়ে তার নামের জায়গায় মুক্তার হোসেন তার স্বজন আমিরুলের নাম প্রতিস্থাপন করেছেন। সে অনুযায়ী তাকে মে মাসের ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে।”
এতে করে অসহায় আতরজান চাল না পেয়ে খালি হাতে ফিরেছেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, আতরজান খাতুনের স্বামী-সন্তান কেউ নেই। রাস্তার ওপরে তার বসবাস। তার নাম কেটে অন্য একজনের নাম বসানোর ব্যাপারটা আমি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। এছাড়া আমার কিছুই করার নেই। চেয়ারম্যান নিজে বিষয়টা দেখবেন বলে জানান।
নাম কেটে দেওয়ার ব্যাপারে বৃদ্ধা আতরজান ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে বলেন, “চাল নিতে গেলে আমি মরে গেছি বলে আমাকে চাল না দিয়ে অন্য জন্যকে চাল দিয়েছে।”
জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে স্বজনের নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ইউপি সদস্য মুক্তার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আতরজানের ভোটার আইডি কার্ড খুঁজে না পাওয়ায় তার নাম বাদ দিয়ে আমিরুলের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টা চেয়ারম্যান অবগত আছেন।”
প্রতিস্থাপনকৃত নামটি তার স্বজনের কিনা-এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, “আমিরুল আমার দূরসম্পর্কের স্বজন হন।”
গত সাড়ে ৩ বছর ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া আতরজানকে চাল দিলেন কিভাবে এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর ইউপি সদস্য মুক্তার দিতে পারেননি। ইউনিয়নের নাগরিকদের জন্ম-মৃত্যুর রেকর্ড ইউপি কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকে। তাই এর দায় ইউপি চেয়ারম্যান এড়াতে পারেন না বলে স্থানীয়রা জানান।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মহিউল ইসলাম মহি জানান, আতরজানকে মৃত দেখিয়ে তার নাম বাদ দিয়ে অন্য জনের নাম প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু আতরজান জীবিত, সেহেতু পুনরায় তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, “বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। যদি এরকম ঘটনা ঘটে, তবে অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়