গুলশানে ৩২ পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত
পুলিশের গুলশান বিভাগে ৩২ জন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার তাদের বাসায় ফলমূল পৌঁছে দেন গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত গুলশানের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আবদুল আহাদ বুধবার বিকালে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাসের কমিউনিটি সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে জনগণকে নিরাপদে ঘরে রাখতে গুলশান বিভাগের পুলিশ সদস্যরা মাঠে থেকে দিনরাত আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। রোবাস্ট কনভয় পেট্রোলিং, শক্তিশালী চেকপোস্ট, মোবাইল পেট্রোলিং, উচ্চপ্রযুক্তিসম্পন্ন সিসিটিভি মনিটরিং, বিভিন্ন সোসাইটিকে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত ও মানুষদের নিরাপদে ঘরে রাখার জন্য বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এডিসি জানান, কর্মহীন, অসহায়, দুস্থ নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত যারা হাত পাততে পারেন না এরকম প্রায় ১০ হাজার পরিবারকে তাদের পরিচয় গোপন রেখে বাসায় গিয়ে ১ এপ্রিল থেকে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো হয়েছে। বর্তমানে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিম্ন মধ্যবিত্ত/মধ্যবিত্তদের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান করতে দেখা যাচ্ছে।
তিনি জানান, প্রকাশ্যে গোল চিহ্ন দিয়ে বাধ্যতামূলক সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করেই বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন অসংখ্য দুস্থদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। নিয়মিতভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। কাঁচাবাজার ও সুপারশপে প্রবেশ বহির্গমন একমুখী করা হয়েছে।সুপারশপ, ওষুধ ও নিত্যপণ্যের দোকানে স্টিকার কিংবা রং দিয়ে সামাজিক দূরত্ব নির্দিষ্টকরণ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে গুলশানের ডিসি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী যুগান্তরকে বলেন, গুলশান বিভাগের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় বিভিন্ন বাসায় ওষুধ ও নিত্যপণ্য পৌঁছানো হচ্ছে। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের হাসপাতালে পাঠানো, আবাসস্থল সংলগ্ন এলাকা লকডাউন ও আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে গুলশান বিভাগের সদস্যরা কাজ করছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তির সৎকার ব্যবস্থা করতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরও নিবেদিত পুলিশ সদস্যরা ধর্মীয় বিধি মেনে মৃত ব্যক্তির সৎকার নিশ্চিত করে চলেছেন। সর্বোচ্চ আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব সর্বোপরি সাধারণ মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই সর্বস্ব বিলিয়ে এই পুলিশ সদস্যরা তৎপর এই করোনাভাইরাস দুর্যোগ থেকে সবাইকে রক্ষা করার জন্য। এসব কাজ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে গুলশান বিভাগের ৩২ জন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকেই কোয়ারেন্টিনে আছেন। তারপরও এই দুর্গম পথ পাড়ি দিতে এই পুলিশ সদস্যরা নিবেদিত মানবতার দীপ্তশপথে বলীয়ান হয়ে।
মনোবল বৃদ্ধির লক্ষ্যে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের কাছে শুভেচ্ছা উপহার পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ডিসি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি