গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ৩ দফা দাবি পরিবহন শ্রমিকদের
অবিলম্বে সড়কে বাসসহ সব যানবাহন চলাচলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে তিন দফা দাবি জানিয়েছে বাস ও পরিবহন শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (৫ মে) সকালে রাজধানীর গাবতলি বাস টার্মিনালে তিন দফা দাবির বাস্তবায়নে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। তবে পুলিশ ঘণ্টা দুয়েক পর তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।
শ্রমিকদের তিন দফা দাবি হলো: বসে থাকা শ্রমিকদের নিয়মিত ত্রাণ সহায়তা করতে হবে। শ্রমিক কল্যাণের নামে বিভিন্ন শ্রমিক মালিক সমিতির ব্যানারে যেসব চাঁদা আদায় বন্ধ হয় সেগুলো বন্ধ করতে হবে এবং অবিলম্বে গণপরিবহন চালু করতে হবে।
শ্রমিকদের অভিযোগ, সড়কে যান চলাচল না থাকায় তারা পরিবার নিয়ে ‘অভুক্ত’ রয়েছেন। গাড়ির চাকা না ঘুরলে যেসব শ্রমিকের খাবার বন্ধ থাকে, সেসব শ্রমিকের পাশে নেই মালিক ও শ্রমিক নেতারা। ‘খাবার দিন, না হলে রাস্তায় গাড়ি চালাতে দিন’, ‘আমরা কি না খেয়ে মরবো’, ‘চাঁদা দিলাম টাকা গেল কই?’ এমন স্লোগানে রাস্তা অবরোধ করে শ্রমিকরা।
ডিএমপির দারুস সালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মিজানুর রহমান জানান, ‘শ্রমিকরা ত্রাণের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেছিল। আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে তুলে দিয়েছি। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।'
কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে সরকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার কয়েক দফায় সাধারণ ছুটি বৃদ্ধি করেছে। সর্বশেষ ১৬ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে গণপরিবহনও আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে রয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা।
গাবতলিতে আন্দোলনকারী বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন, দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে তাদের কেউ খোঁজ-খবর নিচ্ছে না। মালিক সমিতি, পরিবহন নেতা, সংগঠন কেউ তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। প্রথমদিকে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু সাহায্য করা হলেও সেটা এখন বন্ধ।
পাটুরিয়া পরিবহনের শ্রমিক আনিস আলম জানান, করোনার কারণে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু তাদের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। তারা কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা তাদের ভোটার আইডি কার্ড নিলেও কেউ এখনও কোনও খাবার বা ত্রাণ দেননি। তার মতো কর্মহীন হয়ে পড়েছে কয়েক শতাধিক গণপরিবহনের শ্রমিক।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘করোনার কারণে চালকরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হতে পারছে না। ফলে তারা পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। মালিক সমিতি থেকে করোনার শুরুতে সাধারণ শ্রমিকদের পাশে ছিল। কিন্তু মালিকরা কত দিন তাদের পাশে থাকবে? তাদেরও তো ব্যবসা বন্ধ।’
সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান বলেন, ‘একজন সিএনজিচালক থেকে শুরু করে বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহনের শ্রমিকদের প্রতিদিন রাস্তায় বের হলে চাঁদা দিতে হয়। কিন্তু করোনাকালে তাদের পাশে নেই সংগঠনগুলো। আর চাঁদার সেসব টাকা গেল কোথায়!’
নিউজবাংলাদেশ.কম/ডি