সাভারে পোশাক কারখানা বন্ধে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার চিঠি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সায়েমুল হুদা। গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে তিনি এ অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
এদিকে সাভারে একদিনে সাত পোশাক শ্রমিকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. নাজমুল হুদা মিঠু বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার ৫১ জনের নমুনা পাঠালে আট জনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরমধ্যে সাত জনই পোশাক শ্রমিক।
দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গার্মেন্টস বন্ধ ও লকডাউনের বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। তবে এসব বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সায়েমুল হুদা গণমাধ্যমকে বলেন, সাভারের প্রবেশদ্বারগুলো খুলে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শিল্প কলকারখানা চালুর কারণে আমাদের করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। শুক্রবারও কয়েকজন পোশাক শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছেন। এখনই সব পোশাক কারখানা ও প্রবেশপথ বন্ধ করা না হলে এই এলাকায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
উপজেলা নির্বাহীকে লিখা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার চিঠিতে তিনি আরও বলেন, সাভার উপজেলা শিল্পাঞ্চল এবং শ্রমিক অধ্যুষিত হওয়ায় এখানে অধিক জনবসতি গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু পোশাক কারখানা খোলার আগে এর প্রাদুর্ভাব তেমন ছিল না। তাই সব তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রাখাসহ উপজেলার সব প্রবেশপথ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান বরাবর গতকাল বৃহস্পতিবার একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর দফতরসহ স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং জেলা সিভিল সার্জনকেও পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. নাজমুল হুদা মিঠু বলেন, সাভার উপজেলায় মোট ৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে এরমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পাঠানো নমুনার মধ্যে ২৫ জন। বাকিরা অন্যান্য জায়গা থেকে নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন। পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে ৫ জন উলাইল এলাকার বাসিন্দা। তারা ওই এলাকার একাধিক কারখানার শ্রমিক।
কারখানায় কাজে ব্যস্ত পোশাক শ্রমিকরাআশুলিয়ার গ্লোবাল নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানার পরিচালক রেজাউল কবির রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, সারা দেশে করোনা অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তবে তাদের কারখানা বন্ধ রাখার কোনও সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। তবে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতর, বিজিএমইএ, শ্রম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ সায়েদ গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। সিদ্ধান্ত জানানো হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেএইচ