News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:৩৪, ২৯ এপ্রিল ২০২০
আপডেট: ০৪:২০, ২ মে ২০২০

মসজিদ খোলার ঘোষণা প্রত্যাহার করলেন গাজীপুরের মেয়র

মসজিদ খোলার ঘোষণা প্রত্যাহার করলেন গাজীপুরের মেয়র

করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যেই গাজীপুর মহানগরের মসজিদগুলো মুসল্লিদের জন্য খুলে দেয়ার ঘোষণা থেকে সরে এসেছেন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

বুধবার নতুন এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, আমি আমার প্রত্যেকটি নাগরিককে, গাজীপুর নগরের প্রত্যেকটি নাগরিককে অনুরোধ করব, আপনারা সরকার এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে, মসজিদে আপনারা সীমিত আকারে নামাজ পড়বেন, সেই নামাজটা পড়ার জন্য আমি আপনাদের অনুরোধ করছি।”  

সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে যোগাযোগ করার পর নিজের বক্তব্য এক দিনের মাথায় প্রত্যাহার করে নিলেন মেয়র জাহাঙ্গীর।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর গত ৬ এপ্রিল দেশের সব মসজিদে বাইরে থেকে মুসল্লি ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। বলা হয়, ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ মসজিদের খাদেমরা মিলে পাঁচজনের জামাত হবে। রোজা শুরুর পর তারাবির জামাতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ১২ জনে উন্নীত করা হলেও বাইরে থেকে কারও ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা ওঠেনি।

বাংলাদেশে যে সব এলাকায় কোভিড-১৯ রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে, তার একটি হল শিল্প এলাকা গাজীপুর। পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ায় সেখানে ভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়াতে পারে বলে এমনিতেই উদ্বেগ রয়েছে।

এই ঝুঁকির মধ্যেই মঙ্গলবার দুপুরে সিটি কর্পোরেশনের বোর্ড বাজার আঞ্চলিক অফিস থেকে ফেইসবুকে এক ভিডিও বার্তায় মসজিদ খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, “গাজীপুর মহানগরীতে মাত্র কয়েকটি এলাকায় করোনাভাইরাস (রোগী) রয়েছে। বাকিগুলো পাশের উপজেলাগুলোতে অবস্থান করছে।

“যেহেতু গাজীপুরের গার্মেন্টসগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে, তাই এ রমজান মাসে এখন আর মসজিদে অল্প সংখ্যক মুসল্লিদের জন্য সীমাবদ্ধ রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। শুক্রবারের জুমার নামাজ ও রমজানের তারাবির নামাজে মুসল্লিগণ অংশ নিতে পারবেন। এতে সিটি কর্পোরেশনের কোন বাধা থাকবে না।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম বলেন, “মসজিদ বা উপসনালয়ে প্রার্থনার বিষয়ে ঘোষিত সরকারি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার এখতিয়ার আমাদের কারো নেই। এটার পরিবর্তন করতে হলে সরকারের তরফ থেকেই তা আসতে হবে।”

সরকারের আগের নির্দেশনা মেনেই গাজীপুরের মসজিদগুলোতে নামাজ হবে জানিয়ে এ মহানগরের পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “প্রতি ওয়াক্তের নামাজে ৫ জন করে, জুমার নামাজে ১০ জন করে এবং তারাবির নামাজে ১২ জন নিয়ে জামাত করা যাবে। বাইরের কেউ আসতে পারবে না।”

গাজীপুরের মেয়রকে ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়েছে জানিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নুরুল ইসলাম বুধবার বিকালে বলেন, “এ ব্যাপারে আমাদের যে নির্দেশনা আছে তাই ঠিক থাকবে। আমরা কেউ সরকারি নির্দেশনার বাইরে নই। ওই ব্যাপারে মেয়রের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, ওটা তিনি সংশোধন বা প্রত্যাহার করবেন।” 

পরে নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে নতুন এক ভিডিও বার্তায় মেয়র জাহাঙ্গীর বলেন, “প্রত্যেকটি নাগরিকের জীবনের কথা চিন্তা করে আমরা সবাইকে অনুরোধ করব, যেটা আমাদের মানীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেটা যেন আমরা সবাই শতভাগ মেনে চলি।”

আগের দিনের বক্তব্য সংশোধন করে নিয়ে তিনি বলেন, গাজীপুরে কোন জায়গায় কত ‘করোনাভাইরাস পজিটিভ রোগী’ আছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

“সেজন্য আমরা যেটা বলেছিলাম, মসজিদভিত্তিক মানুষকে ব্যাপক হারে যেটা বলা হয়েছিল নামাজের জন্য... সেটা ধর্ম মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের পক্ষ থেকে যেই দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, আমরা যেন গাজীপুরে মসজিদভিত্তিক একং যেসব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আছে, সবাই যেন সেই নিয়ম মেনে চলি। সবাই যেন আপাতত বাসাতেই নামাজ পড়ি।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়