সংসদে প্রধানমন্ত্রী
পরোয়ানা থানায় পৌঁছুলেই খালেদা গ্রেফতার
ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা থানায় যখন পৌঁছুবে তখনই তাকে গ্রেফতারের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ সময়টি খুব বেশি দূরে নয় বলেও জানান তিনি।
বুধবার দশম জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে সংসদ সদস্য এম. এ আউয়ালের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, “যেই মূহূর্তে তল্লাশির আদেশ থানায় পৌঁছাবে, সেই মূহূর্তে ওখানে তল্লাশির ব্যবস্থা করা হবে। এটা করা একান্ত প্রয়োজন, কারণ ওনি বাড়ি ছেড়ে কেন অফিসে বসে আছেন এটা এখন রহস্য। এছাড়া ওনার ওয়ারেন্ট যখনই ওখানে (থানায়) পৌঁছাবে সেই মূহূর্তেই তাকে গ্রেফতারের ব্যবস্থাও করা হবে।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বিএনপি নেত্রী আন্দোলনের নামে অফিসে বসে নাশকতামূলক কাজ করছেন। সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে হেয় প্রতিপন্ন করছেন। দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করছেন। তবে আশার কথা বিদেশি বন্ধুরাও এখন তাকে চিনে ফেলেছেন। তারাও এই জঙ্গিপনা বন্ধের জন্য তাকে আহ্বান জানিয়েছেন।”
“বিএনপি-জামায়াত নেত্রী যে দাবী দাওয়া দিয়েছেন তা সবই তার নিজের এবং তার পুত্রের জন্য” বলেও মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য তার কোন চিন্তাও নাই, দাবিও নাই। তাই জনগণ এখন তাকে একেবারেই সমর্থন করে না বরং জনগণ তার প্রতি ক্ষুব্ধ।”
শেখ হাসিনা বলেন, “খালেদা জিয়া দেশের আইন মানেন না। কোর্ট থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে দেশের যেকোন নাগরিকের দায়িত্ব হচ্ছে কোর্টে আত্মসমর্পণ করা। কিন্ত বেগম খালেদা জিয়া কোর্টের আদেশ অমান্য করে একটি অত্যন্ত খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।”
খালেদা জিয়ার কাজকে ‘জঙ্গিবাদী’ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তিনি যে কাজটা করছেন, সেটা সম্পূর্ণ জঙ্গিবাদী কাজ। তিনি এখন জঙ্গি নেতা হয়ে গেছেন। কাজেই মানুষের জীবন কেড়ে নেয়া। মানুষকে পুড়িয়ে মারা। দেশের ক্ষতি করা, এটাই তার এখন একমাত্র কাজ।”
লিখিত আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি-জামায়াত জোটের চলমান অবরোধ-হরতালের নাশকতা প্রতিহতে প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরো কঠোর হবে। গত ৫ জানুয়ারি থেকে এই ৬৪ দিন ধরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট চলমান অবরোধ-হরতালের নামে দেশে এক এক চরম নৈরাজ্যের সৃষ্টি করেছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পেটের তাগিদে কাজ করতে বেরিয়ে গিয়ে বিগত ৬৪ দিনে ১১৯ জন মানুষ মারা গেছে। যার অধিকাংশই আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পেট্রোল বোমাসহ নানা ধরনের নাশকতা মূলক কাজে সহস্রাধিক ব্যক্তি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। ২ হাজারের অধিক যানবাহন আগুনে পুড়ে গেছে ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়াও ৬টি লঞ্চে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ৩৪ দফায় ট্রেনে নাশকতা হয়েছে।”
“এই নৈরাজ্য দীর্ঘ দিন চলতে দেয়া যায় না” মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে তৎপর আছে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে তারা আরো কঠোর হবে। এ লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উন্নয়নে বর্তমান সরকার ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ৩১ হাজার ৭৪৪টি নতুন পদ সৃজন করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের আরো ৫০হাজার জনবল বৃদ্ধিও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএ/এমএম
নিউজবাংলাদেশ.কম